ডেস্ক রিপোর্ট ।।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর থেকে নথিপত্রহীন অবৈধ অভিবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন। নথিপত্রহীন বাংলাদেশিরাও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়, কারণ ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন বরোর ফুলটন এলাকা থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট (আইস)।
শপথ গ্রহণের পর ট্রাম্প অভিবাসন-সংক্রান্ত শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেছেন এবং নতুন ৪৭টি আদেশ জারি করেছেন। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
নিউইয়র্কে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আইন কর্মকর্তা খাদিজা মুনতাহা রুবা জানান, ফুলটন এলাকায় আড্ডা দেওয়ার সময় নথিপত্রহীন চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা সাদাপোশাকে ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সাদাপোশাকধারী কর্মকর্তারা আকস্মিকভাবে পরিচয়পত্র দেখতে চান। একজন প্রতিবাদ করলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, অন্যদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের দিন ঘোষণা করেছিলেন, সীমান্তে প্রবেশ প্রথমেই বন্ধ করা হবে এবং অপরাধীদের বের করে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার কিছু প্রকল্পও বন্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি রাজু মহাজন জানান, ট্রাম্পের আদেশে বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো হয়ে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারি চাকরিতে বৈচিত্র্যের গুরুত্ব কমিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে, ফলে অনেক বাংলাদেশি চাকরি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন।
সংবিধান তোয়াক্কা না করে নির্বাহী আদেশ জারি করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এই আদেশের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানেরা নাগরিকত্ব পাবে না। তবে ২৪টি রাজ্য ও শহরে ইতিমধ্যে এ আদেশের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
খাদিজা মুনতাহা বাংলাদেশিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সহযোগিতা করা, অন্যের ওয়ার্ক পারমিট ব্যবহার না করা এবং অহেতুক ঝামেলায় না জড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাঙালি-অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে আগে জনসমাগম হতো, এখন সেসব জায়গা ফাঁকা দেখা যাচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।