মোত্তাকিন মুন ।।
স্থানীয় সরকার বিভাগ ২০১৯ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতায় কামরাঙ্গীরচরকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়তে ৮৯০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে। এই প্রকল্প গ্রহণের ৪ বছর পরেও কামরাঙ্গীরচরের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে সমন্বয় করবার দাবী জানিয়েছে “৫৭ নং ওয়ার্ড জন্মভূমি রক্ষা কমিটি”। এই দাবীসহ আরও কিছু দাবী নিয়ে আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) কামরাঙ্গীরচরবাসীদের নিয়ে একটি গণ জমায়েত কর্মসূচি পালন করে “৫৭ নং ওয়ার্ড জন্মভূমি রক্ষা কমিটি”। এ সময় তাদেরকে লিফলেট বিতরণ ও নানা শ্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এই গণ জমায়েতে কামরাঙ্গীরচরবাসী জোর দাবী জানায় কামরাঙ্গীরচরের স্থানীয় বাসিন্দাদের বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়ন না করার। পাশাপাশি কামরাঙ্গীরচরের উন্নয়নের যৌক্তিকতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেন। এবং ভূমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধেও তারা সঠিক সমন্বয়ের দাবী তোলেন।

জন্মভূমি রক্ষায় বদ্ধপরিকর কামরাঙ্গীরচরবাসী
কামরাঙ্গীরচরের ৫৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আরিফুর রহমান আরিফ ঢাকাবার্তাকে জানান “এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নং ওয়ার্ডে ঢাকা দক্ষিণ সিটির অনুরোধে রাজউক কামরাঙ্গীরচরের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নং ওয়ার্ডে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমোদন না দিতে অনুরোধ করেছে। আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে না। কিন্তু নিজের জমি নিজের জায়গায় কেউ ভবন নির্মাণে বাধা দিলে সেটা অন্যায়। এছাড়া আমাদের বাসিন্দাদের সরিয়ে এখানে বিশাল বিশাল রাস্তা ফুটপাত করা হচ্ছে। মানুষ বাদ দিয়ে এসব উন্নয়ন করে কার লাভ? মানুষবিরোধী এসব উন্নয়ণের বিপক্ষে আমরা। এছাড়া আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সকল উন্নয়ণ প্রকল্পের পক্ষে”।

জন্মভূমি রক্ষায় বদ্ধপরিকর কামরাঙ্গীরচরবাসী
একই এলাকার বাসিন্দা ও “৫৭ নং ওয়ার্ড জন্মভূমি রক্ষা কমিটি”র সদস্য ও ছাতা মসজিদ এলাকা যুব সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ফয়সাল আহমেদ টিটু ঢাকাবার্তাকে বলেন “কিছুদিন আগেই ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র মহোদয় কামরাঙ্গীরচরে ১০৪ ফুট রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপণ করে গিয়েছে। কিন্তু আমরা কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দারা বুঝতে পারছি না এত চওড়া রাস্তা দিয়ে আমরা কী করবো! ১০ ফুট চওড়া করা যেতে পারে, এর বেশী চওড়া রাস্তা কেন প্রয়োজন বুঝে আসছে না। আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে নই। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানাই মানুষকে সরিয়ে যেন কোনো প্রকার উন্নয়ন করা না হয়। আমরা এখানে জন্মসূত্রে বাসিন্দা, তাই আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হোক”।

জন্মভূমি রক্ষায় বদ্ধপরিকর কামরাঙ্গীরচরবাসী
গণ জমায়েতের কর্মসূচির পরে দাপ্তরিক কারো কোনো আশ্বাস তারা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন “কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মোহাম্মদ মোস্তফা আনোয়ার এমপি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা আশ্বাস দিয়েছেন আমাদের দাবীগুলো জানতে তারা শীঘ্রই একটি বৈঠকে বসবেন”।
উল্লেখ্য কামরাঙ্গীরচরবাসী “৫৭ নং ওয়ার্ড জন্মভূমি রক্ষা কমিটি”র আওতায় অনুষ্ঠিত গণজমায়েতটি আজ দুপুরের পরে ৫৫ নং ওয়ার্ড থেকে শুরু হয়ে মিছিল দিতে দিতে ৫৭ নং ওয়ার্ডের ঠোটারমাঠে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বাসিন্দাদের হাতে বিভিন্ন দাবী সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে দাড়িয়ে শ্লোগান দিতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: লেকের পাড়ে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর-শিশুপার্ক, পাশেই ময়লার ডিপো!