সৈয়দ হাসসান ।।
শ্রীরাধা দত্তের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। ভারতের শীর্ষস্থানীয় পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষকরাও মনে করেন যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ এখন একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে টিকে থাকা কঠিন হবে যদি নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন না আনা হয়। শ্রীরাধা দত্তের মতে, দলটি হয়তো তার অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারবে, কিন্তু বর্তমান নেতৃত্বে তা সম্ভব হবে না।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে ভারতের নানা মহলে চলছে নানা গুঞ্জন। সম্প্রতি শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের সামনে তিনটি বিকল্প পথ খোলা রয়েছে। প্রথমত, তৃতীয় কোনও দেশে তাকে আশ্রয় দেওয়া। দ্বিতীয়ত, ভারতেই রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে তাকে রেখে দেওয়া এবং তৃতীয়ত, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার পুনরায় ফিরে আসার পথ সুগম করা।

বাংলাদেশ বিষয়ে শ্রীরাধা দত্তের বইয়ের প্রচ্ছদ।
বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ভারত এসে অবস্থান করছেন। তার বর্তমান অবস্থান গোপনীয়তায় ঢাকা থাকলেও, ভারতের সরকারি সূত্র মতে তাকে তৃতীয় কোনও দেশে পাঠানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যদিও এর মধ্যে তেমন অগ্রগতি হয়নি, ভারত সরকার তাকে আশ্রয় দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও চিন্তাভাবনা করছে।
ভারতের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মনে করেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনরায় ফিরে আসতে পারেন এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অবদান রাখতে পারেন। তাদের মতে, দলটি এখনও শেষ হয়ে যায়নি এবং শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং জনপ্রিয়তা তাকে পুনরায় বাংলাদেশে প্রভাবশালী ভূমিকা পালনে সহায়তা করতে পারে।

শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে শ্রীরাধা দত্ত।
তবে, শ্রীরাধা দত্ত এবং অন্যান্য বিশ্লেষকরা বিবিসি বাংলাকে সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসিত করাটা সহজ হবে না। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পুনরুত্থান সম্ভব হবে না বলে তারা মনে করছেন। শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সাথে রাজনৈতিকভাবে যুক্ত থাকলেও, তার বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত তাকে সহায়তা করবে কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের সামনে যে বিকল্প পথগুলো খোলা রয়েছে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তন না এলে দলটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।