স্টাফ রিপোর্টার ।।
‘সরকার ঋণ করে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সরকারের ‘দূষিত’ কর্মকাণ্ডের কারণেই দেশ ‘গভীর দুঃসময়’ অতিক্রম করছে। রিজার্ভ কমছে, এটা বাড়ার কোনো লক্ষণ কেউ দেখছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেফারেন্স দিয়ে বলা হচ্ছে, আইএমএফের ঋণের পরের কিস্তিটা পেলে রিজার্ভটা কিছু বাড়বে।
আজ এক আলোচনা সভায় নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ঋণ কইরা (রিজার্ভ) বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। ঋণ করে রিজার্ভ বাড়ানো, এটা কতটা রিজার্ভ ভাবা দরকার। আমার সম্পদ কত, এটা বৃদ্ধি দেখানোর জন্য যদি ঋণ কইরা দেখাতে হয়, তাহলে এটা প্রকৃতপক্ষে কোনো বৃদ্ধি না। আমাদের প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে, রপ্তানি আয় হুমকির মুখে, তাহলে রিজার্ভ বাড়ার আর সুযোগটা কোথায়?’
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের পরিস্থিতি তুলে ধরে আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নজরুল ইসলাম খান। বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল মতিনের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে লেবার পার্টি এর আয়োজন করে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এখানে ব্যাংক লুট হয়… আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রীকে আমরা বলতে শুনেছি… কোনো একটা ব্যাংকের চুরি নিয়ে বলেছেন যে এটা তো সাগর চুরি নয়, মহাসাগর চুরি। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি… এবং তার ফলাফল আমরা দেখলাম যে আমাদের দেশের চুরিচামারি করে কিছু লোক শুধু দেশে নয়, বিদেশে পর্যন্ত অনেক বড় বড় সম্পদশালী ব্যক্তি হয়ে গেছেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেকগুলো দেশ থেকে আমাদের প্রবাসী শ্রমিকেরা টাকা পাঠান। ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় কর্মজীবীরা যে পরিমাণ অর্থ রেমিট্যান্স পাঠান, সেটা বহু দেশ থেকে আমাদের প্রবাসীরা যত টাকা পাঠান, তার চেয়ে বেশি। এটা বন্ধ করার কোনো পথ আছে কি না, বিবেচনা করার দরকার।’
সাধারণ মানুষের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে… জিনিসপত্রের দাম বাড়া মানে মজুরি কমা, প্রকৃত আয় কমা। সমস্ত মানুষের প্রকৃত আয় বা মজুরি কমে যাচ্ছে। এই অবস্থা… এটা মানা যায় না। সে জন্যই দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ একটা পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে।’
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে তারা (সরকার) বলে, তারা নাকি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, জনগণের সমর্থনে ধন্য হয়ে তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে। কিন্তু তারা জানে যে তাদের এই দাবি অসাড়। ফলে ভয়ের ব্যাপার আছে। জনগণের বিক্ষোভ, জনগণের বিদ্রোহ, ভয় তারা পাচ্ছে।
অর্থনৈতিক সংকটের উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘পত্রিকার হেডিং, ঠেকানো যাচ্ছে না রিজার্ভের পতন। এখন রিজার্ভ কত? ১৩ বিলিয়নের নিচে। তার মানে কি, এটা রেড লাইনেরও নিচে চলে গেছে। সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই। তারপরও তারা ভাব দেখাচ্ছে কাউকে কেয়ার করি না। আমি বলি, অপেক্ষা করুন… দেখুন ওদের পরিণতি কী হয়?’
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, জামায়াতে ইসলামীর নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন, এনডিপির আবু তাহের, গণ অধিকার পরিষদের ফারুক হাসাইন, গণফোরামের মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার প্রমুখ।