স্টাফ রিপোর্টার ।।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ। কিশোরগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য তিনি। তবে এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। তাঁকে সরিয়ে এ আসনে নৌকা তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল কাহার আকন্দের হাতে।
নূর মোহাম্মদ কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এ সংসদীয় আসনে জয়ী হলেও স্থানীয় রাজনীতিতে তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছিল না। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তাঁর বিপক্ষে অবস্থান নেন সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন এবং পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ এলাকার রাজনীতিতে প্রভাব তৈরি করতে গেলে বাধে বিরোধ। দফায় দফায় মারামারি, সংঘর্ষে জড়ান দুই পক্ষের অনুসারীরা। দুই বছর আগে পাকুন্দিয়া আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হন সোহরাব।

আবদুল কাহার আকন্দ
নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এলাকায় একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিলেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাবেক সচিব মো. আবদুল মান্নানের সঙ্গেও বিরোধ দেখা দেয় তাঁর। গত ১৫ জুলাই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছিলেন আবদুল কাহার আকন্দ। ওই সময় তিনি দাবি করেন, তাঁর সভায় হামলা করেছিলেন নূর মোহাম্মদের সমর্থকেরা।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জেলহত্যা মামলা ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, বিডিআর বিদ্রোহ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন আবদুল কাহার। ২০১৯ সালে পুলিশের চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকেই নৌকার মনোনয়ন পেতে এলাকায় জনসংযোগ করছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় গত জুলাইয়ে সরকারের উন্নয়ন প্রচারের জন্য তাঁর আয়োজিত এক সভায় ভাঙচুর চালায় ২০ থেকে ৩০ জনের একটি দল।
নূর মোহাম্মদ গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, কোন্দল সবখানেই আছে। খুব কম এলাকায় শান্তিতে কাজ করতে পারেন সংসদ সদস্যরা। রাজনীতি আসলে নষ্ট-ভ্রষ্টদের হাতে বেশি। তাই চাইলেও কাজ করা কঠিন। শুরু থেকেই নানা অসহযোগিতা ছিল। কমিটি করতে গিয়ে আরও বেশি বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বলেও প্রতিকার পাননি।
দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ঠিক বুঝতে পারছেন না। শক্তভাবে এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে হয়তো এমনটা হতো না। তবে কর্মী-সমর্থকেরা চাইলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন না তিনি।
কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, ব্যক্তিগতভাবে নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো অভিযোগ নেই। তবে স্থানীয় রাজনীতির কোন্দল তাঁকে নেতিবাচক পরিস্থিতিতে ফেলেছে। এ ছাড়া আবদুল কাহার আকন্দের অবদান অনেক। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ একাধিক মামলার তদন্তে তিনি সফলতা দেখিয়েছেন। তাই এবার তাঁকে নৌকা প্রতীকের জন্য বিবেচনা করা হয়েছে।