ক্রিকইনফো ।।
জস বাটলারের ঝড়ো ব্যাটিং আর মোহাম্মদ সিরাজের আগুনঝরা স্পেলে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে (RCB) ৮ উইকেটে হারালো গুজরাট টাইটান্স (GT)। সিরাজ তার পুরনো দলের বিপক্ষে খেলতে নেমে ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দারুণ প্রভাব ফেলেন, তবে লিয়াম লিভিংস্টোনের ৫৪ রানের ইনিংসের পরও বড় সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারেনি আরসিবি।
সাত বছর আরসিবির হয়ে খেলার পর এবার প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মোহাম্মদ সিরাজ। প্রথম ওভারেই ফিল সল্টকে আউট করার সুযোগ পেলেও উইকেটরক্ষক জস বাটলার ক্যাচ ফেলে দেন। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি—দ্বিতীয় ওভারেই ১৪৫.৯ কিমি গতির এক দুর্দান্ত ইয়র্কারে সল্টকে বোল্ড করেন সিরাজ। এরপর পাওয়ারপ্লেতেই তিনি তুলে নেন দেবদত্ত পাড়িক্কালের উইকেট, যিনি লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান।
ডেথ ওভারে ফিরে এসে সিরাজ আঘাত হানেন আরও একবার, এবার তার শিকার হন লিয়াম লিভিংস্টোন। ১৯তম ওভারে লিভিংস্টোনকে বোল্ড করে আরসিবির শেষ ভরসাটুকুও শেষ করে দেন তিনি। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ১৪টি ডট বল করেন সিরাজ, যা গুজরাটের জয়ের ভিত গড়ে দেয়।
শুরুতেই ধাক্কা খায় আরসিবি। পাওয়ারপ্লের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪২ রান তুলতে পারে তারা। রাজত পাটিদার আউট হলে স্টেডিয়াম নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এরপর লিয়াম লিভিংস্টোন ও জিতেশ শর্মা মিলে ইনিংস মেরামত করার চেষ্টা করেন।
জিতেশ শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন, ইশান্ত শর্মার এক ওভারে ১৭ রান তোলেন তিনি। লিভিংস্টোন প্রথমদিকে ধুঁকলেও পরে রশিদ খানকে টানা ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ কমান। তবে আরসিবির দুর্ভাগ্য, তারা কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করে। লিভিংস্টোন দু’বার ক্যাচ বাঁচান, একবার স্টাম্পিং মিস হয়।

শুবমান গিলের উইকেট উদযাপন করছেন ভুবনেশ্বর কুমার ও বিরাট কোহলি
১৩তম ওভারে র সাই কিশোরের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে জিতেশ ৩৩ রান করে আউট হন। এরপর ক্রুনাল পান্ডিয়াকে ফিরিয়ে দেন একই বোলার। ১৭ ওভার শেষে ১২৯ রানে ৬ উইকেট হারানো আরসিবি শেষদিকে ডেভিডের ১৮ বলে ৩২ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ১৬৯ রান পর্যন্ত যেতে পারে।
গুজরাটের ইনিংসের শুরুতে কিছুটা চাপে পড়ে তারা। অভিজ্ঞ পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও জশ হ্যাজলউড দারুণ সুইং করান। শুভমান গিল কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও বেশি দূর যেতে পারেননি। তিনি ভুবনেশ্বরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরলে ৪.৪ ওভারে ৩২ রানে ১ উইকেট হারায় গুজরাট।
এরপরই মাঠে নামেন জস বাটলার। শুরুতে কিছুটা সময় নেন তিনি, ৮ বলে ৫ রান করে ধীরে এগোন। তবে রশিখ সালামের ওভারে ১২ বলে ২৭ রান নিয়ে দ্রুত গতি বাড়ান।
সাই সুদর্শন তার সঙ্গে যোগ দিয়ে ৩৬ বলে ৪৯ রান করেন এবং ৭৫ রানের জুটি গড়েন। সুদর্শন আউট হওয়ার পর বাটলার আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। ৩১ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন এবং শেরফান রাদারফোর্ডের সঙ্গে ৩২ বলে ৬৩ রানের অপরাজিত জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
এই জয়ে তিন ম্যাচে দ্বিতীয়বার জিতলো গুজরাট টাইটান্স। অন্যদিকে, টানা দুই জয়ের পর প্রথম হারের স্বাদ পেল আরসিবি, যা তাদের পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে নামিয়ে দিল। দিল্লি ক্যাপিটালস ও পাঞ্জাব কিংসের পর এখন অবস্থান করছে বেঙ্গালুরু।