ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত সোয়া ২টা। ফার্মগেট ফুটওভার ব্রিজ থেকে কারওয়ান বাজার সিগন্যাল—মাত্র ৩০০ মিটারের পথ, কিন্তু লাগল ১ ঘণ্টা ১৭ মিনিট। ট্রাক, পিকআপ, ভ্যানের সারি ঠেলে এগোতে গিয়ে দেখা মিলল না কোনো ট্রাফিক পুলিশের। এমন চিত্র শুধু এখানে নয়—মিরপুর, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মগবাজার, মালিবাগ, রামপুরাসহ ঢাকার বহু এলাকায় একই অবস্থা।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর ৬০০ ট্রাফিক পয়েন্টে দিনে চার শিফটে দায়িত্ব পালন হলেও রাত ২টার পর থাকে মাত্র ৯টিতে। বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক ওই পয়েন্টগুলো ছাড়া বাকি সড়কে যানবাহন চলে ‘নিজ দায়িত্বে’। ফলে রাতেও তীব্র যানজটের শিকার রাজধানীবাসী।
রাতের ঢাকায় যানজটের অন্যতম কারণ বাজারকেন্দ্রিক এলাকা। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, আগারগাঁও, বাংলামোটর, মগবাজার, মালিবাগ, রামপুরা ব্রিজ, মিরপুর কাঁচাবাজার—সবখানেই রাতে ট্রাক-পিকআপে পণ্য নামানো হয়, চলে ভ্যানযোগে সরবরাহ। পর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকায় এসব সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জটলা লেগে থাকে।

রাতের আলো ঝলমলে ঢাকা
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতের ট্রাফিক পরিকল্পনা হালনাগাদ করা জরুরি। দিনের মতোই রাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠা বাজার, মহল্লা ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে ট্রাফিক ডিউটি বাড়াতে হবে। নইলে রাতের যানজট শুধু রাজধানীর গতি রোধ করবে না, দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়াবে।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাতে ভারী যানবাহনের চলাচল বেড়ে যায়। ডিএমপির উচিত রাতের যানজটপ্রবণ পয়েন্টগুলোতে ট্রাফিক সদস্য বাড়ানো। কারণ ঢাকার অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে রাতে।’
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার জানান, ‘রাত সাড়ে ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত ৩৮টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে, আর রাত ২টা থেকে ভোর পর্যন্ত ৯টি পয়েন্টে ডিউটি থাকে। তবে যানজট শেষ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখেন সদস্যরা।’