স্টাফ রিপোর্টার ।।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ঢাকা ও আশপাশের জেলাজুড়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭ (বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর)। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, তাদের পরিমাপে মাত্রা ৫.৫ এবং কেন্দ্রস্থল নরসিংদী থেকে সামান্য পশ্চিম–দক্ষিণ-পশ্চিমে।
কম্পনের সময় ঢাকার প্রায় সব এলাকায় মানুষ আতঙ্কে ভবন থেকে বেরিয়ে আসেন। বিশেষত মিরপুর, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী ও পুরান ঢাকা—এসব এলাকায় তীব্র ঝাঁকুনি অনুভূত হয়েছে।
- আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত
- আবহাওয়া অধিদপ্তর: মাত্রা ৫.৭, কেন্দ্র নরসিংদীর মাধবদী
- ইউএসজিএস: ৫.৫ মাত্রা, গভীরতা ১০ কিমি
- মিরপুর, উত্তরা, গুলশান, ধানমন্ডি, বনানী, পুরান ঢাকাসহ সব এলাকায় তীব্র দুলুনি
- আতঙ্কে ভবন ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ
- সিঁড়িতে ধাক্কাধাক্কি—অনেকে শিশু কোলে নিয়ে দৌড়ে নামেন
- দেয়াল ফাটা, আসবাবপত্র পড়ে যাওয়ার ভিডিও–ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
- নাজমা বেগম: “পুরো বাসা দুলছিল, নাতনিকে জড়িয়ে দাঁড়িয়েছিলাম”
- শারমিন আক্তার: “আগে কখনো ভবন এমন দুলতে দেখিনি”
- ওয়াহিদ খান: “মনে হলো মাথার ওপর কিছু ভেঙে পড়বে”
- বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার: “বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে তীব্র ঝাঁকুনি”
আর চাইলে পুরো নিউজ আবার নতুন করে রিরাইট করে দিতে পারি, অথবা ইউটিউব স্ক্রিপ্ট বানিয়ে দিতে পারি।
মিরপুর ১১ নম্বর এলাকার বাসিন্দা নাজমা বেগম বলেন, “হঠাৎ পুরো বাসা দুলছিল। নাতনিকে বুকে জড়িয়ে এককোনায় দাঁড়িয়েছিলাম। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই।”
যাত্রাবাড়ীর নবীনগরের শারমিন আক্তার বলেন, “এভাবে ভবন দুলতে আগে কখনো দেখিনি। সন্তানদের নিয়ে দৌড়ে নিচে নেমেছি।”
শ্যামলীর বাসিন্দা ওয়াহিদ খান বলেন, “এতটা তীব্র ভূমিকম্প জীবনে অনুভব করিনি। মনে হলো মাথার ওপর কিছু একটা ধসে পড়বে। বাচ্চাকে কোলে নিয়েই দৌড়েছি। সিঁড়ি ভেঙে পড়বে—এই ভয়ই বেশি কাজ করছিল।”
ভূমিকম্পের কয়েক মিনিটের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষ তাদের অভিজ্ঞতা জানাতে থাকেন। কেউ লিখেছেন—“এভাবে ঢাকা কখনো কাঁপেনি।” অনেকে বাসার ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে—
- দেয়ালে ফাটল দেখা যাচ্ছে
- জানালা–দরজা কেঁপে ওঠার শব্দ শোনা যাচ্ছে
- আলমারি–টেবিলের জিনিসপত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়েছে
এসব ভিডিও এবং ছবি বিশেষ করে মিরপুর, ধানমন্ডি ও উত্তরা এলাকার বাসিন্দারা বেশি শেয়ার করেছেন।
কম্পন শুরু হলে আবাসিক ভবন, অফিস ও মার্কেট—সব জায়গায় মানুষ তাড়াহুড়ো করে নিচে নেমে আসেন। অনেক ভবনে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় ধাক্কাধাক্কি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
ভবনগুলোর নিরাপত্তা–ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্ক আরও বাড়ে যখন বেশ কয়েকটি এলাকায় দেয়াল ফাটার খবর পাওয়া যায়।
ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার বলেন, “এটি ইন্দো–বার্মা টেকটোনিক প্লেট এলাকায় সংঘটিত হয়েছে। আমার অভিজ্ঞতায়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী কম্পন।”
তিনি আরও বলেন, shallow-depth (কম গভীরতায়) ভূমিকম্প হলে ঝাঁকুনি বেশি অনুভূত হয়, আর আজকের ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার—যা ঝাঁকুনিকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
দুপুর নাগাদ কোনো বড় ধরনের আফটারশক বা ক্ষয়ক্ষতির সরকারি তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে কিছু এলাকায় ক্ষুদ্র ফাটল এবং আসবাবপত্র পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।