বিনোদন ডেস্ক ।।
স্কুলজীবনের একটি বড় সময় মাকে ছাড়াই কেটেছে পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়ের। তাই এখন মায়ের সঙ্গে সময় কাটানো তাঁর কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মঙ্গলবার ছিল মা চিত্রা চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে আবেগঘন এক পোস্টে নিজের জীবনের অনেক কথাই ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী।
মায়ের জন্মদিনে সামাজিক মাধ্যমে একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন বিবৃতি। জানিয়েছেন, তাঁদের সম্পর্ক অনেকটাই ‘টম অ্যান্ড জেরি’র মতো—ঝগড়া যেমন হয়, তেমনই অটুট ভালবাসাও। জন্মদিনের দিন পেশাগত কাজ থাকলেও উদ্যাপনে কোনও ঘাটতি রাখেননি তিনি। কেক কাটার ব্যাপারে রাতে আপত্তি থাকায় সকালেই মাসি ও মেসোমশাইয়ের উপস্থিতিতে প্রাতরাশের সময় কেক কেটে মায়ের জন্মদিন পালন করেছেন তাঁরা। বিকেলে মায়ের এক বন্ধুর বাড়িতে ঘরোয়া আয়োজনেও যোগ দেন বিবৃতি।

মা চিত্রা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়
চিত্রা চট্টোপাধ্যায় কর্মসূত্রে ভারতের নানা প্রান্তে বদলি হওয়ায় ছোটবেলায় মেয়ের সঙ্গে খুব বেশি সময় কাটাতে পারেননি। তবে রাজস্থানে স্কুলে পড়াকালীন পাঁচ বছর একসঙ্গে ছিলেন তাঁরা। সেই স্মৃতিই আজও কাছে টানে বিবৃতিকে। তিনি জানান, ছোটবেলায় মায়ের না থাকা নিয়ে কোনও অভিমান তাঁর নেই; বরং এখন তিনি নিজে থেকেই সময় করে মায়ের পাশে থাকার চেষ্টা করেন।
২০২০ সালে বাবাকে হারিয়েছেন বিবৃতি। জীবনের নানা পর্যায়ে মনোবল, ইচ্ছাশক্তি এবং স্বাধীনভাবে বাঁচার অনুপ্রেরণা তিনি পেয়েছেন মায়ের কাছ থেকেই। অভিনেত্রী বলেন, “আমার কেরিয়ার আজ যেখানে দাঁড়িয়ে, তার পেছনে মায়ের নীরব সমর্থন সব সময় ছিল। আমার পরিবারও সব সময় আমাকে পাশে পেয়েছে।”
অভিনয়জীবনে এখন মনোযোগ দিতে চান বিবৃতি। ছোটবেলা থেকে অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে নিজেকে গুছিয়ে নিতে শিখেছেন বলে একা থাকা তাঁর কাছে কখনও সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়নি। করোনা মহামারির পর মা চিত্রা কলকাতায় ফিরে আসায় এখন তাঁরা একসঙ্গেই থাকেন। মা-মেয়ের সম্পর্ক এখন অনেকটাই বন্ধুত্বপূর্ণ বলেই জানান তিনি।
প্রেম বা বিয়ের প্রসঙ্গে মা চিত্রার পরামর্শ শুনিয়ে বিবৃতি হেসে বলেন, “মা আমাকে পরিষ্কার বলেছে—সম্পর্কে না জড়াতে, এমনকি বিয়েও না করতে।” যদিও ভবিষ্যৎ কেউ জানে না বলেই তাঁর মন্তব্য, “এই মুহূর্তে পুরোপুরি ক্যারিয়ারে মন দিতে চাই। সম্পর্ক বা বিয়ের মতো কিছুই ভাবছি না।”
আগামী আগস্টে মুক্তি পেতে যাচ্ছে বিবৃতি চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ছবি ‘দেবী চৌধুরাণী’। পাশাপাশি, রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায় হিন্দি ওয়েব সিরিজ ‘পরিণীতা’-তেও দেখা যাবে তাঁকে। ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবনের প্রতিটি ধাপে মা ও পরিবারের ভালবাসা ও সমর্থনই তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি—সেই বার্তাই যেন দিয়ে গেলেন বিবৃতি এই বিশেষ দিনে।