ডেস্ক রিপোর্ট ।।
শ্রীলঙ্কার মাঠে টি–টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্বপ্নটা বহুদিন ধরেই অধরা ছিল বাংলাদেশের। আজ সেই ইতিহাস গড়লেন দুই ‘হাসান’—মেহেদী হাসান ও তানজিদ হাসান। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অলিখিত ফাইনালে ৮ উইকেটের দাপুটে জয়ে সিরিজ ২–১ করেই দেশে ফিরছে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচের নায়ক নির্দিষ্ট করা কঠিন। কারণ বল হাতে মেহেদী হাসান ১১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে করলেন আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে নিজের ক্যারিয়ার–সেরা পারফরম্যান্স, অন্যদিকে ব্যাট হাতে তানজিদ হাসান অপরাজিত ৭৩ রানে এনে দিলেন দলের জয়। দুই তরুণের যুগলবন্দিতেই রচিত হলো লঙ্কা征যুদ্ধের সোনালি অধ্যায়।

ম্যাচ সেরা মেহেদী হাসান
ইনিংসের প্রথম বলেই পারভেজ হোসেন এলবিডব্লু হয়ে ফিরে গেলেও বাংলাদেশ খুব একটা বিচলিত হয়নি। লিটন দাস (২৬ বলে ৩২) ও তানজিদের ৭৪ রানের জুটি বাংলাদেশকে এগিয়ে দেয়। এরপর তাওহিদ হৃদয়ের (২৫ বলে অপরাজিত ২৭) সঙ্গে ৫৯ রানের আরেকটি জুটি গড়ে ম্যাচ শেষ করেন তানজিদ। ৪৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি ছক্কা, যেগুলোর প্রতিটিতেই ছিল আত্মবিশ্বাস আর নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন।
গত মে মাসে সহ–অধিনায়ক থাকলেও একাদশেই জায়গা হারান মেহেদী। এবার দলে সুযোগ পেয়ে যেন ক্ষতিপূরণ আদায় করলেন পুরোমাত্রায়। নতুন বলে শরীফুলের সঙ্গী হয়ে তুলে নিলেন কুশল পেরেরা, চান্ডিমাল, আসালাঙ্কা ও নিশাঙ্কার মূল্যবান ৪টি উইকেট। ওভারে ২.৭৫ ইকোনমি রেটে বল করে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেন।

সিরিজ সেরা লিটন দাস
শুরুটা ঝড়ো হলেও (নিশাঙ্কা ৪৬, শানাকা অপরাজিত ৩৫), মাঝের ওভারগুলোয় বাংলাদেশের স্পিনে দিশেহারা লঙ্কানরা ১৩২ রানে গুটিয়ে যায়। তবে এই স্কোরটা ১০০–এর নিচে থামত যদি না শরীফুল শেষ ওভারে ২২ রান দিয়ে ম্যাচের চেহারা একটু বদলে দিতেন। তিনি ৪ ওভারে দেন ৫০ রান, তানজিম হাসানও ছিলেন ব্যয়বহুল (২ ওভারে ২৩)। তবে বাকিদের ইকোনমি রেট ৫–এর নিচে।
তানজিদ যেখানে ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না, সেখানে এমন পরিস্থিতিতে ক্যারিয়ার–সেরা ইনিংস খেলেই প্রমাণ করলেন টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার যোগ্য তিনি। আর মেহেদী জানিয়ে দিলেন—বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে তাঁর জায়গা এখনো পাকা।
দুজনের দাপটে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কায় প্রথমবারের মতো টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতল, আর সেটা ০–১ পিছিয়ে থেকেও! ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একইভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দল। আজ ৭ বছর পর সেই কীর্তি আবারো পুনরাবৃত্তি করলেন মেহেদী–তানজিদরা।