স্টাফ রিপোর্টার ।।
নাচে-গানে, রঙে-ছবিতে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো পহেলা বৈশাখের ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। সোমবার সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হওয়া এই বর্ণিল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।
শোভাযাত্রাটি ঘুরে শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে চারুকলায় ফিরে শেষ হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার, জাতিগোষ্ঠী ও দেশের মানুষ অংশ নেন।
শোভাযাত্রায় তুলে ধরা হয় ফ্যাসিবাদের প্রতীকী মুখ, ফিলিস্তিনের পতাকা, বাংলা ঐতিহ্যের মুখোশ ও মোটিফ, নৃত্যরত কৃষক, তরমুজ, ইলিশ, বাঘ, পায়রা, পালকিসহ নানা শিল্পমণ্ডিত উপাদান। উপস্থিত ছিল পুলিশের অশ্বারোহী দলও।
শোভাযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি—দাঁতাল মুখ, শিং, ভয়ার্ত চোখ নিয়ে তৈরি এক নারীর মুখাবয়ব, যা অনেকে শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি বলে মনে করেন। শোভাযাত্রার আগে গত শনিবার ভোরে এই মোটিফে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে মূল কাঠামো পুড়ে গেলেও, চারুকলার বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা রাতেই নতুন করে সেটি তৈরি করেন।
এ বছর শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মানুষ ও বিদেশি অতিথিরাও অংশ নেন। ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তাও তুলে ধরা হয়।
শোভাযাত্রাটি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিত থাকলেও এ বছর পুরনো নামে ফিরে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, যশোরের ‘চারুপীঠ’ ১৯৮৬ সালে প্রথম এই ধারার শোভাযাত্রার সূচনা করে। ঢাকায় চারুকলা অনুষদ ১৯৮৯ সাল থেকে নিয়মিত এই আয়োজনে যুক্ত রয়েছে।