স্টাফ রিপোর্টার ।।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এখন থেকে হবে সবার—সব দলের, সব মানুষের। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনটিকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। উপস্থিত ছিলেন সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ, সচিববৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বিজয়ী শিশুশিল্পী ও তাদের অভিভাবকরা।
- প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ধারাবাহিকতায় বিটিভিকে দেওয়া হচ্ছে স্বায়ত্তশাসন
- বিটিভি আর কোনো দলের বা রাজনৈতিক স্বার্থের হাতিয়ার হবে না
- নতুন করে শুরু হচ্ছে বিভিন্ন বয়স ও পটভূমির প্রতিযোগীদের রিয়েলিটি শো
- জুলাই বিপ্লবের চেতনায় গড়ে উঠছে ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ
- সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অন্তর্ভুক্তি ও বৈচিত্র্যই হবে নতুন শক্তি
- ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’-এ বিজয়ী শিশুশিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা
- বিজয়ীদের উদ্দেশে তথ্য উপদেষ্টার আহ্বান: “তোমরাই বহন করবে নতুন বাংলাদেশের পতাকা”
উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আমরা যখন একটি নতুন বাংলাদেশের যাত্রায় আছি, তখন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ধারাবাহিকতায় বিটিভিকেও স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হচ্ছে। বিটিভিকে এমনভাবে পুনর্গঠন করা হচ্ছে যাতে এটি বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। আমরা চাই, বিটিভি যেন কোনো দলের বা রাজনৈতিক স্বার্থের হাতিয়ার না হয়। এখন থেকে বিটিভি হবে সবার, সব দলের এবং সব মানুষের।”

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বিটিভি আয়োজিত ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুশিল্পীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
বিটিভিকে আধুনিকায়নের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, “নতুন বাংলাদেশে আমরা চাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সৃজনশীলতা বিকশিত হোক। বিটিভিতে নতুন করে আরও রিয়েলিটি শো, ভিন্ন বয়স ও পটভূমির প্রতিযোগীদের নিয়ে নতুন অনুষ্ঠান চালু করা হবে। আশা করি, এসব উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “আজকের এই আয়োজন শুধু একটি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন বাংলাদেশের একটি নতুন দিগন্ত। জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশে তরুণদের স্বপ্ন, সৃজনশীলতা ও প্রতিভাকে সামনে আনতে ‘নতুন কুঁড়ি’ অসাধারণ এক প্ল্যাটফর্ম। ধর্ম, বর্ণ বা অর্থনৈতিক অবস্থান নির্বিশেষে সারাদেশ থেকে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগী বাছাই করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের ত্যাগের বিনিময়েই নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। সেই চেতনা থেকেই আমরা বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক এবং সবার বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে এগিয়ে যাচ্ছি।”

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিজয়ীদের ফটোসেশন
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, “বাংলাদেশ বহু সংস্কৃতির, ঐতিহ্যের এবং ভাষার দেশ। দীর্ঘদিন আমরা এই বৈচিত্র্যের সৌন্দর্যকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে পারিনি। অনেক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। এখন আমরা চাই, জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সবাই যেন আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়। আমাদের সংস্কৃতির শক্তি হবে অন্তর্ভুক্তি, বৈচিত্র্য ও মানবতার সম্মিলন।”
বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, “নতুন কুঁড়িদের প্রতিভা, নিষ্ঠা ও উদ্ভাবনী শক্তি আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। তারা নতুন বাংলাদেশের পতাকাবাহী, যারা নিজেদের প্রতিভা ও পরিশ্রম দিয়ে দেশের সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”