সৈয়দ হাসসান ।।
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলামকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় আট দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান পুলিশ রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
হত্যা মামলার পটভূমি
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত ১৯ জুলাই নিউ মার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। ওই ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। কামরুল ইসলামও আসামিদের একজন।
রিমান্ডের আবেদনের ভিত্তি
নিউ মার্কেট থানার এসআই জাহাঙ্গীর আরিফ আদালতে কামরুলের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে বলেন,
“ঘটনার সাথে কামরুল ইসলাম সরাসরি জড়িত। তার ইন্ধনেই পুলিশ গুলি চালায়। তিনি ধানমন্ডিসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।”
আদালতের আদেশ
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত কামরুল ইসলামকে আট দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
গ্রেপ্তার ও রাজনৈতিক অবস্থা
সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
সরকার পতনের পর থেকে কামরুল ইসলাম জনসম্মুখে ছিলেন না। আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা কামরুল টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৯-২০১৪ মেয়াদে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
দুর্নীতির অভিযোগ
সরকার পরিবর্তনের পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে। অভিযোগে বলা হয়,
- তিনি নিজ নামে ও সন্তানদের নামে দেশ-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়েছেন।
- আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে আদালতের কর্মচারী নিয়োগে ঘুষ নিয়েছেন।
- ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম আমদানির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এছাড়া, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সময় টেলিভিশনের শেয়ার বণ্টনেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রভাব
২০০৮ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাওয়া কামরুল ইসলাম নবম সংসদে আইন প্রতিমন্ত্রী এবং পরের মেয়াদে খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তার মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি।
এর পাশাপাশি সময় টেলিভিশনের লাইসেন্সের সময় তার ভাগ্নে আহমেদ জোবায়েরের নামে থাকা ৯৩ শতাংশ শেয়ারের ৯০ শতাংশই কামরুল ইসলামের বলে জানা যায়।