শনিবার, ডিসেম্বর ৬, ২০২৫

রাজধানীতে সব মোবাইল ফোন মার্কেট বন্ধ, ভোগান্তিতে ক্রেতারা

বসুন্ধরা সিটি, মোতালেব প্লাজা ও ইস্টার্ন প্লাজাসহ বড় বাজারগুলো হঠাৎ বন্ধ; এনইআইআর বাস্তবায়নের প্রতিবাদে এমবিসিবির ধর্মঘট।

by ঢাকাবার্তা
মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ থাকায় ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে বসুন্ধরা সিটি মোবাইল মার্কেটে

স্টাফ রিপোর্টার ।। 

রাজধানীর ছোট বড় সব মোবাইল ফোনের মার্কেট বন্ধ থাকায় দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বসুন্ধরা সিটি মোবাইল মার্কেটসহ বড় বাজারগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় থাকলেও ফটকে এসে জানতে হচ্ছে—মার্কেট বন্ধ। নতুন ফোন কেনা থেকে শুরু করে সার্ভিসিং—কোনো কাজই করতে না পেরে অনেকে হতাশ হয়ে ফিরছেন।

বুধবার বিকেলে বসুন্ধরা সিটির মূল ফটকে গিয়ে দেখা যায়, ‘মোবাইল সিটি’ পুরোপুরি বন্ধ। ভেতরে ঢোকার আগেই ভিড় করা ক্রেতারা আলোচনা করছেন কেন হঠাৎ মার্কেটের সব দোকান বন্ধ। একই অবস্থা মোতালেব প্লাজা ও ইস্টার্ন প্লাজাতেও।

  • ঢাকার ছোট-বড় সব মোবাইল মার্কেট হঠাৎ বন্ধ
  • বসুন্ধরা সিটি মোবাইল মার্কেটে ভিড় করেও ফিরে যেতে হচ্ছে ক্রেতাদের
  • মোবাইল কিনতে ও সারাতে এসে সেবা না পেয়ে হতাশ বহু মানুষ
  • এনইআইআর বাস্তবায়নের প্রতিবাদে এমবিসিবির ধর্মঘট ঘোষণা
  • ডিবি বাসা থেকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও এক সাংবাদিককে নিয়ে যাওয়ায় উত্তেজনা
  • ব্যবসায়ীদের দাবি: এনইআইআর চালু হলে ফোনের দাম বাড়বে, ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে
  • লাগেজ ফোনে প্রস্তাবিত ৫৭% কর আরোপে গভীর উদ্বেগ
  • সরকার বলছে—১৬ ডিসেম্বর থেকে অনিবন্ধিত ফোন নেটওয়ার্কে চলবে না

আজিমপুর থেকে আসা সাবিহা শারমিন বলেন, “ফোন কিনতে এসেছিলাম। পুরো বসুন্ধরা সিটি খোলা, কিন্তু মোবাইল মার্কেট বন্ধ। কেন বন্ধ বুঝতে পারছি না। ফিরে যেতে হচ্ছে।”

সারা দেশে মোবাইল বিক্রি বন্ধের আহ্বান দিয়েছে স্মার্টফোন ও গ্যাজেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)। ‘এনইআইআর বাস্তবায়ন: মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ ও করণীয়’ শীর্ষক ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ধর্মঘট ঘোষণা আসে।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে এমবিসিবির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ পিয়াস এবং সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বাসা থেকে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা আজ সকাল থেকে ডিবি কার্যালয় ঘেরাও করেন। পরে সকালে মিজানুর রহমান এবং সন্ধ্যায় আবু সাঈদ পিয়াসকে ডিবি ছেড়ে দেয়।

এমবিসিবির অনেক সদস্য অভিযোগ করেন, “কোনো অভিযোগ ছাড়াই তুলে নেওয়া কেন? আমরা ব্যবসায়ী, আলোচনা করলেই সমাধান সম্ভব। কিন্তু ২০–২৫ হাজার ব্যবসায়ীকে পথে বসিয়ে কী প্রমাণ করতে চায়?”

সংগঠনটির দাবি, এনইআইআর চালু হলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফোনের দাম বাড়বে, ফলে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাবে অনেক মডেল।

মুঠোফোন বিক্রেতা ‘সাইম প্লাস’-এর স্বত্বাধিকারী মো. কামাল হোসেন বলেন, “লাগেজ ফোনে ৫৭ শতাংশ ভ্যাট–কর আরোপের প্রস্তাবে আমরা গভীর উদ্বেগে আছি।” তাঁর ভাষ্য, দেশে প্রায় ৩০–৩৫ হাজার ব্যবসায়ী লাগেজ ফোন বিক্রি করেন; এগুলো নকল নয়। কম দামে ফোন বিক্রি করে তারা কোনোমতে টিকে থাকেন। উচ্চ শুল্ক আরোপ হলে দাম বেড়ে যাবে এবং অবৈধ উপায়ে ফোন আনার প্রবণতা বাড়তে পারে। এতে সরকার রাজস্ব হারাবে।

তিনি বলেন, দেশে ৯টি কোম্পানি যেসব ফোন সংযোজন করে, তা বাজারের সব ব্র্যান্ডের চাহিদা পূরণ করতে পারে না। তাই লাগেজ ফোন অনেকের জন্য সেকেন্ড অপশন। তিনি সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভ্যাট–ট্যাক্স কমানোর আহ্বান জানান।

আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে সরকার ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) চালু করতে যাচ্ছে। এতে নিবন্ধনবিহীন, চুরি হওয়া বা অনুমোদন ছাড়া আনা ফোন দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে আর চলবে না—এটাই সরকারের প্রত্যাশা।

 

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net