কুররাতুল আইন ।।
সম্প্রতি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা নতুন ১০ নভোচারীর নাম ঘোষণা করেছে। এই ১০ জনের মধ্য থেকেই কেউ ভবিষ্যতে মঙ্গলের লাল মাটিতে প্রথম পা রাখবেন, কিংবা চাঁদে তৈরি হতে যাওয়া মানুষের নতুন ঘাঁটির প্রথম বাসিন্দা হবেন। ২০২১ সালের পর এটিই নাসার নতুন নভোচারী দল।
২২ সেপ্টেম্বর সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে জমকালো অনুষ্ঠানে তাঁদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। আট হাজারের বেশি আবেদনকারীর মধ্য থেকে বাছাই করা হয়েছে পাঁচজন নারী ও পাঁচজন পুরুষকে। নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি বলেন, “তোমরা আমেরিকার সেরা ও মেধাবী মানুষ। আমরা আবার চাঁদে ফিরব এবং চাঁদের অভিজ্ঞতা নিয়ে মঙ্গলে যাব। আর এই যাত্রায় নেতৃত্ব দেবে এই নতুন দল।”

অ্যানা মেনন (৩৯): ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ইতিমধ্যেই স্পেসএক্সের ‘পোলারিস ডন’ মিশনে মহাকাশে গেছেন।
এই ১০ নভোচারী এখন দুই বছরের কঠোর প্রশিক্ষণ নেবেন। প্রশিক্ষণে থাকবে মহাকাশযাত্রা, স্পেসওয়াক, রোবোটিক্স, ভূতত্ত্ব, বেঁচে থাকার কৌশল, মেডিসিন, এমনকি বিদেশি ভাষাও। দুই বছর শেষে তাঁরা গ্র্যাজুয়েট হয়ে নাসার সক্রিয় নভোচারী কোরে যোগ দেবেন। তখন তাঁরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, চাঁদের আর্টেমিস মিশন কিংবা ভবিষ্যতের মঙ্গল অভিযানে দায়িত্ব পালন করবেন।
এই ১০ জনের মধ্যে রয়েছেন—
- বেন বেইলি (৩৮): মার্কিন সেনাবাহিনীর চিফ ওয়ারেন্ট অফিসার, ৩০টিরও বেশি বিমানে ২ হাজার ঘণ্টার অভিজ্ঞতা।
- লরেন এডগার (৪০): ভূতত্ত্ববিদ, মঙ্গল রোভার মিশনের দীর্ঘদিনের গবেষক, আর্টেমিস-৩ ভূতত্ত্ব দলের ডেপুটি প্রধান।
- অ্যাডাম ফুরম্যান (৩৫): মার্কিন বিমানবাহিনীর মেজর, এমআইটি থেকে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক, যুদ্ধকালীন সময়ে ৪০০ ঘণ্টা ফ্লাইট অভিজ্ঞতা।
- ক্যামেরন জোন্স (৩৫): মার্কিন বিমানবাহিনীর টেস্ট পাইলট, ১,৬০০ ঘণ্টার বেশি ফ্লাইট অভিজ্ঞতা।
- ইউরি কুবো (৪০): প্রাক্তন স্পেসএক্স কর্মকর্তা, ফ্যালকন-৯ লঞ্চ ডিরেক্টর, বর্তমানে হাইড্রোজেন কোম্পানির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট।
- রেবেকা ললার (৩৮): সাবেক মার্কিন নৌবাহিনী কর্মকর্তা, ৪৫টিরও বেশি বিমানে ২,৮০০ ঘণ্টা ফ্লাইট অভিজ্ঞতা।
- অ্যানা মেনন (৩৯): ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ইতিমধ্যেই স্পেসএক্সের ‘পোলারিস ডন’ মিশনে মহাকাশে গেছেন।
- ইমেল্ডা মুলার (৩৪): প্রাক্তন মার্কিন নৌবাহিনী কর্মকর্তা ও চিকিৎসক, ডুবুরি প্রশিক্ষণে মেডিকেল সহায়তা দিয়েছেন।
- এরিন ওভারক্যাশ (৩৪): মার্কিন নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ও টেস্ট পাইলট, ২৪৯ বার বিমানবাহী রণতরীতে অবতরণ করিয়েছেন।
- ক্যাথরিন স্পাইস (৪৩): সাবেক মার্কিন মেরিন কর্পস হেলিকপ্টার পাইলট, বর্তমানে গালফস্ট্রিম অ্যারোস্পেস করপোরেশনে ফ্লাইট টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার।
নাসার জনসন স্পেস সেন্টারের পরিচালক ভেনেসা উইচে এই নতুন দলকে “আমেরিকার সেরা ও মেধাবী প্রজন্ম” বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর ভাষায়, এই দল মানব মহাকাশ অভিযানের “গোল্ডেন এজ” শুরু করবে, যা মানুষকে নিম্ন কক্ষপথের বাইরে চাঁদ ও মঙ্গলে নিয়ে যাবে।