স্টাফ রিপোর্টার ।।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন এক ফ্র্যাঞ্চাইজি—‘নোয়াখালী রয়্যালস’। সায়ান গ্লোবালস নামের একটি প্রতিষ্ঠান দলটির মালিকানা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। লন্ডনভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে দরপত্র জমা দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখার কথাও জানিয়েছে। তাদের ওয়েবসাইটেও দেখা গেছে লন্ডনের একটি অফিসিয়াল ঠিকানা।
গত ২৪ জুন বিসিবি সভাপতি বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে সায়ান গ্লোবালস জানিয়েছে, বিপিএলে দল নেওয়ার পাশাপাশি নোয়াখালী অঞ্চলের ক্রিকেট উন্নয়নেও তারা কাজ করতে চায়। এর আগে মিরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লন্ডনপ্রবাসী ব্যবসায়ী ও সায়ান গ্লোবালসের প্রতিনিধি আহমেদ জামিল বলেন, ‘আমরা আমাদের দিক থেকে পুরোপুরি প্রস্তুত। বিসিবিকে যে ডকুমেন্টেশন জমা দিতে হয়, সবই প্রস্তুত রেখেছি। আশা করি বিসিবি আমাদের প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে দেখবে এবং নোয়াখালীবাসীর বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে।’
বিপিএলে এখন পর্যন্ত ১১টি আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। কখনোই কোনো আসরে ‘নোয়াখালী’ নামে কোনো দল দেখা যায়নি। তাই ‘নোয়াখালী রয়্যালস’ যুক্ত হলে বিপিএলে যুক্ত হবে নতুন রঙ, নতুন এক আঞ্চলিক আবেগ। এবারের আসর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৫ সালের শেষ দিকে, সম্ভবত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম জানিয়েছেন, “বিসিবি যখন ইওআই (এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট) বা বিডিং আহ্বান করবে, তখন সবকিছু স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে।” এর মানে দাঁড়ায়, শুধুমাত্র আগ্রহ প্রকাশ করলেই হবে না, বিসিবির আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদন পেতে হবে।
বিপিএলের ইতিহাসে এর আগে ছয় থেকে আটটি দল নিয়ে আসর আয়োজন হয়েছে। ঢাকাভিত্তিক দলগুলো একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হলেও একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা, নাম ও স্পন্সর পরিবর্তন ঘটেছে প্রায়ই। সাম্প্রতিক আসরগুলোতে ফরচুন বরিশাল, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস, সিলেট স্ট্রাইকার্স, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মতো দলগুলো আলোচনায় এসেছে।
শেষ দুটি আসরে চমক দেখিয়েছে ফরচুন বরিশাল। ২০২৪ আসরে তারা প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে এবং ২০২৫ সালে চট্টগ্রাম কিংসকে হারিয়ে পরপর দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়। বিপিএলের জনপ্রিয়তা ও বাণিজ্যিক মূল্যায়নও দিন দিন বাড়ছে, বিশেষ করে বিদেশি খেলোয়াড়দের আগমনে।
তবে মাঠের ক্রিকেট যতই জমজমাট হোক, ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচন ও পরিচালনায় বিসিবিকে নিতে হয় অনেক কৌশলী সিদ্ধান্ত। অতীতে বিতর্কিত মালিকানা ও আর্থিক অনিয়মে বেশ কিছু দল হারিয়ে গেছে। সুতরাং নোয়াখালী রয়্যালসের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বিসিবি নিশ্চয়ই অতীত অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেবে।
নোয়াখালীবাসীর প্রত্যাশা, বিপিএলে নিজেদের নামের দল দেখতে পাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রিয় খেলাটির সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে যুক্ত হওয়া। যদি সবকিছু পরিকল্পনামতো এগোয়, তাহলে বিপিএলের ১২তম আসরে দেখা যেতে পারে এক নতুন আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নের সম্ভাবনা—নোয়াখালী রয়্যালস।