স্টাফ রিপোর্টার ।।
ঢাকা-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের নির্দেশে তাঁকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে একটি প্রিজন ভ্যান এসে থামে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত চত্বরে। প্রিজন ভ্যানে ছিলেন কামরুল ইসলাম। পুলিশের সদস্যরা তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে হাজতখানায় নিয়ে যান।
হাজতখানায় আসামিদের জন্য মেঝেতে মাদুর বিছানো ছিল। সেখানে বসে থাকতে দেখা যায় কামরুল ইসলামকে। দুপুর ১২টার পর তিনি হাজতখানার পুলিশ সদস্যদের ডাকেন এবং দ্রুত কারাগারে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। তবে পুলিশ জানায়, আদালতের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তাঁকে নেওয়া সম্ভব নয়। এরপর তিনি কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকেন।
বেলা ১টার পর কামরুল ইসলাম আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তিনি হাজতখানার ভেতরে পায়চারি শুরু করেন এবং বারবার পুলিশ সদস্যদের তাগাদা দেন যেন তাঁকে দ্রুত কারাগারে পাঠানো হয়।
বেলা ২টার দিকে আদালতের নির্দেশে প্রথমে কামরুল ইসলামকে হাজতখানা থেকে বের করা হয়। তখন তাঁর মাথায় পুলিশের হেলমেট ও বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ছিল। হাজতখানার সামনে বের হওয়ার পরপরই তিনি হোঁচট খান। তখন এক পুলিশ সদস্য তাঁকে ধরে বলেন, ‘আস্তে… আস্তে।’
এতে আরও ক্ষুব্ধ হন কামরুল ইসলাম। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘হেলমেটের গ্লাসে ময়লা। আমি কিন্তু চোখে কিছু দেখতেছি না…।’ তখন এক পুলিশ সদস্য তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা ধরছি…।’
তবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই গ্লাসটা মুখের ওপর থেকে উঠান না!’ পরে পুলিশের দুই সদস্য তাঁকে ধরে প্রিজন ভ্যানে তুলে দেন।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে।
এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কামরুল ইসলামের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ১৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা জমা হয়। এসব হিসাবে থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। বর্তমানে সেখানে রয়েছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
সোমবার দুপুরে আদালত তাঁর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তুলে কেরানীগঞ্জ কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।