কূট পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের আসন্ন ঢাকা সফর হঠাৎ করেই স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ২৭-২৮ এপ্রিল তাঁর বাংলাদেশ সফর নির্ধারিত থাকলেও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলা ও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সফরটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন সফরসূচি পরে যৌথভাবে নির্ধারণ করা হবে।
১৩ বছরের ব্যবধানে এই সফরে প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তুতি চলছিল। এ উপলক্ষে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক সইয়ের কথা ছিল। সফরটি পাক-বাংলা সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল।
সফরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ১৭ এপ্রিল ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বেলুচ। তিনি পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন এবং ইসহাক দারের সফর চূড়ান্ত করেন। এই বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, প্রতিরক্ষা, বিমান যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে আলোচনার ভিত্তি গড়ে ওঠে।
এর আগে ২০১০ সালে ইসলামাবাদে দুই দেশের সর্বশেষ সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়। দীর্ঘ অচলাবস্থার পর এবার বাংলাদেশ ও পাকিস্তান পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পদক্ষেপ নিচ্ছিল। তবে উত্তপ্ত আঞ্চলিক পরিস্থিতি এই প্রক্রিয়াকে আবারও স্থবির করে দিল।
বাংলাদেশ স্পষ্ট করেছে, ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা, ক্ষতিপূরণ, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন ও সম্পদের হিস্যা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত সম্পর্কের অগ্রগতি সম্ভব নয়। কায়রোতে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বৈঠকেও এ বার্তা পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
চলমান উত্তেজনার মধ্যেও দুই দেশই ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার জানালা খোলা রাখছে—যৌথ আলোচনায় নির্ধারিত হবে নতুন দিন, আর ততদিন অপেক্ষার পালা।