স্পেসটেটর ।।
পৃথিবী থেকে ২৫ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে থাকা মহাকাশযান ভয়েজার-১–এর বহুদিন বন্ধ থাকা মূল থ্রাস্টারগুলো সফলভাবে পুনরায় চালু করেছে নাসা। এই সাফল্যের ফলে মহাকাশযানটি তার কক্ষপথে স্থিতিশীলভাবে চলতে পারবে এবং ভবিষ্যতে পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞানীরা একে ‘অলৌকিক মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
থ্রাস্টার চালুর নির্দেশ পাঠানোর একদিন পর, থ্রাস্টারের তাপমাত্রা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাওয়ায় নিশ্চিত হওয়া যায় যে সেগুলো আবার সক্রিয় হয়েছে। থ্রাস্টার পুনরায় চালু হওয়ায় ভয়েজার-১ তার অ্যান্টেনা পৃথিবীমুখী রেখে তথ্য আদান-প্রদান বজায় রাখতে পারবে।
১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বরে উৎক্ষেপণ হওয়া ভয়েজার-১ বর্তমানে আন্তঃনাক্ষত্রিক অঞ্চলে অবস্থান করছে। এর অ্যান্টেনা পৃথিবীমুখী রাখতে বিভিন্ন সেটের থ্রাস্টার ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল রোল থ্রাস্টার। তবে ২০০৪ সালে হিটার ইউনিট বিকল হওয়ায় এটি বন্ধ হয়ে যায়।
দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাকআপ থ্রাস্টার দিয়ে কাজ চালানো হলেও জ্বালানির অবশিষ্টাংশ সেই থ্রাস্টারগুলোর পথ বন্ধ করে দেওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। তাই ঝুঁকি নিয়েই মূল থ্রাস্টার পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০ মার্চ পাঠানো নির্দেশনায় সাড়া আসতে সময় লাগে ২৩ ঘণ্টার বেশি।
নাসার প্রকৌশলী টড বারবার বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম থ্রাস্টারগুলো মৃত। কিন্তু আমাদের একজন সহকর্মীর চিন্তাশক্তির কারণেই এই অলৌকিক সাফল্য সম্ভব হয়েছে।’
ভয়েজার মিশনের ব্যবস্থাপক করিম বাদারউদ্দিন বলেন, ‘তৎকালীন সময়ে কেউ ভাবেনি, ভয়েজার-১ এত বছর পরও চলবে কিংবা মূল থ্রাস্টার আবার চালু করা সম্ভব হবে।’
উল্লেখ্য, ভয়েজার-১ এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে দূরে অবস্থান করা মহাকাশযান। এতে একাধিক থ্রাস্টার রয়েছে, যা এর অবস্থান নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এর আগে এটি মূল ও ব্যাকআপ থ্রাস্টার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ব্যাকআপ রোল থ্রাস্টারগুলোও এখন ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।