রবিবার, ডিসেম্বর ৭, ২০২৫

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর চোখে জল, পর্তুগালের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়

by ঢাকাবার্তা
পর্তুগালকে সমতা এনে দেওয়া গোলের পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

ডেস্ক রিপোর্ট ।। 

দুইবার পিছিয়ে পড়েও থেমে থাকেনি পর্তুগাল। অতিরিক্ত সময়েও সমতা, এরপর টাইব্রেকারে যেন নিখুঁত এক নাটকের সমাপ্তি। স্পেনকে ৫–৩ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো উয়েফা নেশনস লিগের চ্যাম্পিয়ন হলো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দল। ২০১৯ সালের পর ২০২৫—দুই আসরে দুইবার, ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে।

অসাধারণ এই ম্যাচে ৯০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ছিল ২–২। অতিরিক্ত সময়েও আর কোনো গোল না হওয়ায় গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই নিখুঁতভাবে পাঁচটি শটেই বল জালে জড়ায় পর্তুগাল। স্পেনের হয়ে চতুর্থ শটটি ফিরিয়ে দেন দিয়োগো কস্তা, আর রুবেন নেভেসের পঞ্চম ও শেষ গোলেই নিশ্চিত হয় পর্তুগালের শিরোপা।

২১তম মিনিটে স্পেনকে এগিয়ে দেন মার্তিন জুবিমেন্দি। কিন্তু মাত্র ৫ মিনিট পরই বাঁ প্রান্ত থেকে উঠে এসে দুর্দান্ত এক গোল করে সমতায় ফেরান ম্যাচসেরা খেলোয়াড় নুনো মেন্দেজ। রোনালদোরও ছিল এই গোলে ভূমিকা।

জাতীয় দলের হয়ে তৃতীয়বার ট্রফি হাতে উদ্‌যাপন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর।

জাতীয় দলের হয়ে তৃতীয়বার ট্রফি হাতে উদ্‌যাপন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর।

বিরতির ঠিক আগে পেদ্রির চোখ ধাঁধানো পাসে গোল করে স্পেনকে আবার এগিয়ে দেন মিকেল ওইয়ারসাবাল। তবে পর্তুগালের ‘অভিনেতা’ তখনো বাকি—৬১ মিনিটে নুনো মেন্দেজের ক্রস স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে চলে যায় ওত পেতে থাকা রোনালদোর কাছে। কাছ থেকে হেড করে গোল করেন ৪০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড—এটি ছিল তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ১৩৮তম গোল।

৮৮ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন রোনালদো। তবে অতিরিক্ত সময়েও কোনো দল জয়সূচক গোল খুঁজে পায়নি।

পর্তুগালের হয়ে টাইব্রেকারে গোল করেন গনসালো রামোস, ভিতিনিয়া, ব্রুনো ফার্নান্দেজ, নুনো মেন্দেজ ও রুবেন নেভেস। স্পেনের প্রথম তিন শটেই সফল হন মিকেল মেরিনো, অ্যালেক্স বায়েনা ও ইসকো। কিন্তু চতুর্থ শটে মোরাতার বল ঠেকিয়ে দেন কস্তা। এরপর নেভেস গোল করতেই জয় উদ্‌যাপন শুরু করে পর্তুগাল।

জাতীয় দলের হয়ে তৃতীয়বার ট্রফি জিতেছেন রোনালদো—২০১৬ ইউরো, ২০১৯ নেশনস লিগ ও এবার ২০২৫ নেশনস লিগ। ম্যাচের পর স্পোর্ট টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোনালদো বলেন, “পর্তুগালের হয়ে জেতাটা সব সময়ই বিশেষ কিছু। ক্লাব ক্যারিয়ারে অনেক ট্রফি জিতেছি, কিন্তু দেশের হয়ে জয় পাওয়ার চেয়ে বড় কিছু নেই। এই চোখের জল, এই কর্তব্য—এসবেই অনেক আনন্দ।”

জাতীয় দলের হয়ে ২০০৩ সাল থেকে খেলা এই কিংবদন্তি বলেন, “ম্যাচের আগে কিছুটা অস্বস্তি ছিল, কিন্তু দেশের জন্য পা ভাঙলেও খেলতাম। আমি জানতাম, এই প্রজন্মের জন্য, আমাদের পরিবারদের জন্য—এই জয় দরকার।”

ম্যাচ শেষে ট্রফি হাতে রোনালদোর চোখে জল। তিনি জানতেন, এটাই হয়তো শেষবারের মতো এমন একটি মঞ্চে দাঁড়ানোর সুযোগ। কিন্তু ৪০ বছর বয়সেও তিনি যেন প্রমাণ করলেন—পর্তুগাল মানেই এখনো রোনালদো।

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net