স্টাফ রিপোর্টার ।।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, সামনে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময়। তিনি বলেন, ‘আমাদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। একটা লাশ পড়লে আমরাও লাশ নেব। এত সুশীলতা করে লাভ নেই। অনেক হয়েছে, অনেক ধৈর্য ধরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারত ও ভিনদেশিদের স্বার্থ রক্ষা করে—এমন কাউকে আমাদের মধ্যে ঠাঁই দেওয়া যাবে না, নিরাপদ থাকতে দেওয়া যাবে না। আমরা যদি নিরাপদ না থাকি, তাহলে এই দেশের শত্রুরাও নিরাপদ থাকতে পারবে না। এটা আমাদের বেসিক কন্ডিশন।’
আজ সোমবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
- সামনে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময় বলে মন্তব্য মাহফুজ আলমের
- ‘আমাদের গায়ে হাত দিলে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে’—হুঁশিয়ারি
- জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী লড়াইয়ে ব্যর্থতার কথা স্বীকার
- শরিফ উসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ
- মুজিববাদের শেকড় সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিকভাবে গভীর—মন্তব্য
- ভিনদেশি স্বার্থরক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা
- দেশের রাজনৈতিক লড়াই বাইরে গেলে মুক্তির লড়াইও বাইরে যাবে—হুঁশিয়ারি
মাহফুজ আলম বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর আমাদের যে লড়াই করার কথা ছিল, সেই লড়াইয়ে আমরা পরাস্ত হয়েছি। সে কারণেই আজ আমাদের মধ্য থেকে জুলাইয়ের বীর শরিফ উসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমাদের হাতে মুজিববাদী, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় সন্ত্রাসীদের প্রতিটি বাড়ি চুরমার করে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু সেদিন আমরা নিজেদের সংবরণ করেছি বলেই আজ তারা এমন সাহস দেখাতে পারছে। আমরা যদি ক্ষমা করে ভুল করে থাকি, তাহলে প্রতিজ্ঞা করছি—আর ক্ষমা করব না।’
মুজিববাদ প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা শুরুতে বলেছিলাম মুজিববাদের মূল উৎপাটন করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এর শেকড় এত গভীরে প্রোথিত যে, একে সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার জন্য যে শক্তি দরকার, সেই শক্তি অর্জনের বা সেই লড়াইয়ে এগোনোর উদ্যোগ খুব কমই দেখা গেছে। ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার একটি উদ্যোগ—এর বাইরে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ খুব কম।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭২-এর সংবিধানের ভিত্তিতে যে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে এই স্বাধীন বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষের লাশ পড়েছে। একই সঙ্গে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বজায় রাখতে সাংস্কৃতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক থেকে শুরু করে আইন অঙ্গনের মানুষদেরও নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে।’
ভিনদেশি শক্তিকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘হাদিকে মারার যুক্তি তৈরি করেছে ভিনদেশি অ্যাসেটরা। তাকে যখন গুলি করা হলো, তখন সবাই নীরব ছিল। কেউ কথা বলেনি—সবাই আমাদের সঙ্গে নাটক করেছে।’
মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম, এই দেশের রাজনৈতিক লড়াই ও দ্বন্দ্ব দেশের ভেতরেই মোকাবিলা করব। কিন্তু আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই—এই দেশের লড়াই যদি দেশের বাইরে যায়, তাহলে এই দেশের মুক্তির লড়াইও দেশের বাইরে যাবে।’
