স্টাফ রিপোর্টার ।।
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আজ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেবেন তিনি।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম সাংবাদিকদের জানান, ১১ সেপ্টেম্বর মাহমুদুর রহমান ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নাহিদের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে তারা আসতে পারেননি। পরে প্রসিকিউশনের সময় চাওয়ার আবেদন মঞ্জুর করে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১ সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন তারিখ ধার্য করেন ১৫ সেপ্টেম্বর।

রক্তাক্ত মাহমুদুর রহমান। ফাইল ফটো
প্রসিকিউটর তামিম বলেন, মামলায় প্রসিকিউশন ৮১ জন সাক্ষীর তালিকা দাখিল করেছে, যার মধ্যে ৪৫ জনের সাক্ষ্য ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বর্ণনার পর সিজার লিস্টের সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলেই আর নতুন সাক্ষী নেওয়া হবে না। প্রসিকিউশনের মতে, এ মামলার প্রমাণের জন্য এই সংখ্যক সাক্ষ্যই যথেষ্ট, এরপর যুক্তিতর্কে যাওয়া হবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণ করতে হলে দেখাতে হবে যে হত্যাকাণ্ডগুলো বিচ্ছিন্ন নয়, বরং পরিকল্পিতভাবে, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এবং একই প্যাটার্নে সংঘটিত হয়েছে। এসব অপরাধ শুধু ২০২৪ সালের জুলাই মাসেই নয়, শুরু হয়েছিল ২০০৯ সাল থেকে, বিভিন্ন সময়ে ও পদ্ধতিতে, যা চলেছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট পর্যন্ত।
মাহমুদুর রহমান ও নাহিদ ইসলাম তাদের সাক্ষ্যে এই দীর্ঘ সময়ের অপরাধের বর্ণনা দেবেন। এ মামলায় সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি বা ঊর্ধ্বতন নির্দেশনার দায়ে শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয় গত ১০ জুলাই। পরে ৩ আগস্ট প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলার আসামি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ইতোমধ্যে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। তবে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে পলাতক দেখিয়ে বিচার চলছে এবং তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন দায়িত্ব পালন করছেন।