স্টাফ রিপোর্টার ।।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে প্রেষণে থাকা অবস্থায় গুমে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, এবং এসব অভিযোগের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে সেনা সদর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, যদি তদন্তে কারও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রিফিংয়ে ‘মব ভায়োলেন্স’ এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল জানান, কে এম নূরুল হুদাকে জনতার হাতে হেনস্তার ঘটনায় শনাক্ত ছয়জনের একজনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। তিনি জামিনে মুক্তি পেলেও, সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও মব সহিংসতার বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকবে বলে জানান। চট্টগ্রামের পটিয়া এবং কুমিল্লার মুরাদনগরে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করা হয়।
জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল বলেন, এটি রাষ্ট্রীয় বিষয়, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা এলে সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক সহায়তা দেবে। তিনি জানান, ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে লুট হওয়া ৮০ শতাংশ অস্ত্র-গুলিবারুদ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, বাকিগুলো নির্বাচনের আগেই উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
অস্ত্র উদ্ধারে সেনাবাহিনীর সফলতা তুলে ধরে বলা হয়, গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬৯২টি অবৈধ অস্ত্র ও প্রায় ২.৯ লাখ গুলিবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৬ জন অপরাধী, যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং সদস্য, ডাকাত ও মাদক সংশ্লিষ্টরা রয়েছে। গত দুই সপ্তাহেই ২৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ১০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান অভিযানে গতকাল রাতে ও আজ ভোরে কেএনএফ–এর (কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে কেএনএফের একজন ‘মেজর’ পদবির কমান্ডারসহ দুজন নিহত হয়। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ৩টি এসএমজি, ১টি চায়নিজ রাইফেল, ৩৬৪ রাউন্ড গুলি, সামরিক সরঞ্জাম ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, চলমান অভিযানের ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং কেএনএফের ভয়ে ঘরছাড়া বান্দরবানের ১৩৮ জন বম উপজাতি ঘরে ফিরেছেন।