গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ।।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে ঘিরে বুধবার একাধিক সহিংস ঘটনা ঘটেছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশের গাড়িতে আগুন, ইউএনওর গাড়িবহরে হামলা, পার্কে ভাঙচুর ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শহর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৌনে তিনটার দিকে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
সকাল সাড়ে ৯টায় সদর উপজেলার উলপুর-দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসানের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় তাঁর গাড়ির চালক আহত হন।
পরে বেলা ১১টায় পৌর পার্কে কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণে সমাবেশ করে এনসিপি। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসাইন, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। তবে সমাবেশ শেষে নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিসোঁটা হাতে হামলা চালানো হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। হামলাকারীরা পুলিশের গাড়িও ঘিরে ফেলে। পুলিশ ও সেনা সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এনসিপির মুখপাত্র নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই হামলার পেছনে রয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।” তিনি দাবি করেন, তাদের জানানো হয়েছিল সব ঠিক আছে, কিন্তু সমাবেশস্থলে এসে তারা ভিন্ন চিত্র দেখেন।

হামলার শিকার ইউএনওর গাড়ি
গোপালগঞ্জের ইউএনও এম রকিবুল হাসান বলেন, “নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে।” অপরদিকে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, “একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে, তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এনসিপি ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে। আজকের গোপালগঞ্জের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অন্তত ১০ হাজার লোকের সমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে এনসিপির দাবি, এই কর্মসূচিকে বানচাল করতেই পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে।