স্টাফ রিপোর্টার ।।
ছাত্রদের বাদ দিয়ে পুরোনো দ্বিদলীয় রাজনীতিতে ফেরার জন্য এস্টাবলিশমেন্ট প্রস্তুত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তাঁর মতে, ছাত্রদের সম্পূর্ণ অসহযোগিতার মুখে তাদের পাশে না রেখে পুরোনো রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় যেতে চাইছে এস্টাবলিশমেন্ট।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে মাহফুজ এসব কথা বলেন। স্ট্যাটাসের শিরোনাম ছিল ‘কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা’।
তিনি লিখেছেন, ‘ক্ষমতার কেন্দ্র অনেক, তবে দায় সব সময় সরকারের উপরেই পড়ে। অথচ প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও পুলিশে রাজনৈতিক দলগুলো স্টেইক নিয়েই বসে আছে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন আর সহযোদ্ধা নেই। এস্টাবলিশমেন্ট চায় ছাত্রদের বাদ দিয়ে আগের দ্বিদলীয় চক্রে ফিরে যেতে। নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৩০ জনের মধ্যে ছাত্র মাত্র দুজন। রাষ্ট্রপতি অপসারণের পর থেকে ছাত্র প্রতিনিধিরা কোণঠাসা।’
তিনি বলেন, সরকারে ছাত্রদের সুষম প্রতিনিধিত্ব ছাড়া প্রকৃত প্রভাব তৈরি করা সম্ভব নয়।
স্ট্যাটাসে মাহফুজ আরও উল্লেখ করেন, ছাত্ররা বিভক্ত হয়ে পড়ায় তাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মতোই ব্যবহার করা হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দেশজুড়ে সাড়া ফেলতে ব্যর্থ। অভ্যুত্থান-পন্থী ছাত্র-জনতা দ্বিধান্বিত ও বিভক্ত।
তাঁর ভাষায়, ‘সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র আপসকামী, মিডিয়া ও ব্যবসায়ে এখনো একটি পক্ষের আধিপত্য, বিচার বিভাগও পুরোনো বন্দোবস্তের নিয়ন্ত্রণে।’
মাহফুজ বলেন, ‘বাম-ডানপন্থীদের সংস্কৃতিগত কোন্দল আন্দোলন দুর্বল করেছে। শাহবাগ ও শাপলা যেন চিরকালীন অবস্থা হয়ে গেছে। সবচেয়ে নিষ্ঠাবান ছাত্ররাও দলে ভাগ হয়ে পড়েছেন, কৃতিত্ব ও কোরাম নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকজনের বিরুদ্ধে আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে অভিযোগ থাকলেও তার প্রভাব পড়েছে সমগ্র ছাত্র সমাজে। ছাত্ররা নতুন সুশীল সমাজ ও অভ্যুত্থানপন্থী প্রতিষ্ঠান গড়তে পারেনি। রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও অর্থনীতিতে ছাত্রদের কোনো অংশীদারিত্ব নেই।’
শেষে মাহফুজ আলম লেখেন, শহীদ ও আহতদের ন্যায্যতা ও বিচার নিশ্চিতে সরকারসহ সব পক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। শহরকেন্দ্রিক আন্দোলন গ্রামাঞ্চলে ছড়ায়নি। এর পেছনে যেমন রাজনৈতিক দল ও এস্টাবলিশমেন্টের স্বার্থ কাজ করেছে, তেমনি দায় আছে ছাত্রদের অভিজ্ঞতার অভাব ও অসংগঠিত অবস্থার।
তার মতে, এই সংকট কাটাতে হলে রাষ্ট্র ও এস্টাবলিশমেন্টে ছাত্রদের ন্যায্য অংশ নিশ্চিত করতে হবে এবং সবাইকে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে। এর আগে ছাত্রদের মধ্যে সততা, আদর্শ, নিষ্ঠা ও ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে এবং পুরোনো বন্দোবস্তের পৃষ্ঠপোষকদের নিষ্ক্রিয় করতে হবে।