শনিবার, ডিসেম্বর ৬, ২০২৫

কোটালীপাড়ায় গণগ্রেপ্তার ও হয়রানির অভিযোগে স্থানীয় বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

by ঢাকাবার্তা
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ।। 

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ‘জুলাই পদযাত্রা’কে ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনার পর সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ‘গণগ্রেপ্তার ও হয়রানির’ অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আজ রোববার (২১ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ঘাঘর বাজারে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থানীয় নেতারা এই অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম মহিউদ্দিন বলেন, “গত বুধবার উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কোটালীপাড়া-পয়সারহাট সড়ক অবরোধ করে ওয়াপদার হাটে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন। তারা গাছ কেটে সড়কের বিভিন্ন অংশে সাধারণ মানুষের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে পুলিশ ১৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১,৫০০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। এই মামলার সূত্র ধরে পুলিশ সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”

তিনি আরও দাবি করেন, “অভিযোগপত্রে যাদের নাম দেওয়া হয়েছে, তাদের অনেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। অথচ তাঁদেরকে রাতের আঁধারে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার হাওলাদার বলেন, “আমাদের জানা মতে মামলার অধিকাংশ আসামি সাধারণ মানুষ। তাহলে এই নিরীহ মানুষদের কীভাবে আসামি করা হলো? কারা এই প্রক্রিয়ার পেছনে আছে, তা খতিয়ে দেখা উচিত।”

এ সময় কোটালীপাড়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওলিউর রহমান হাওলাদার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, “বিক্ষোভের সময় আপনারা ঘটনাস্থলে ছিলেন। তখন কেন কাউকে আটক করা হলো না? আপনারা তো ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। সেই অনুযায়ী প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু তা না করে নিরীহদের হয়রানি করা হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ অনৈতিক।”

তিনি আরও হুঁশিয়ার করে বলেন, “আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করি। সাধারণ মানুষের ওপর এমন আচরণ চলতে থাকলে আমরা তাদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ গড়ে তুলব।”

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির সভাপতি ইউছুপ আলী দাড়িয়া, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শেখ ফায়েকুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক ছলেমান শেখ, যুবদলের সদস্যসচিব মান্নান শেখ, ছাত্রদলের আহ্বায়ক লালন শেখসহ বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

তবে বিএনপির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “আমরা কোনো গণগ্রেপ্তার করছি না। শুধুমাত্র সংঘর্ষের ঘটনায় যাঁরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, তাঁদেরকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখানে গণগ্রেপ্তারের প্রশ্নই ওঠে না।”

অন্যদিকে, গণগ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, “জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন নিরপরাধ কেউ হয়রানির শিকার না হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”

বিএনপি নেতাদের দাবি ও প্রশাসনের বক্তব্যের মধ্যে বিরোধ থাকলেও কোটালীপাড়ার স্থানীয়দের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিষয়টি নিরপেক্ষ ও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত, যাতে কেউ অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net