ডেস্ক রিপোর্ট ।।
পাকিস্তানের করচিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক উর্দু সম্মেলনে এবার অতিথি হিসেবে অংশ নেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিরা খান। ওয়াসিম বাদামির সঞ্চালনায় একটি প্রাণবন্ত সেশনে মাহিরা করাচি শহরের প্রতি তার ভালোবাসা, শিকড় এবং এর সহনশীলতার প্রতি গভীর প্রশংসার কথা জানান।
সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে মাহিরা বলেন, “আমি ১৯৮৪ সালে করাচির লেডি ডাফরিন হাসপাতালে জন্মেছি। আমার দাদা আমাদের বাড়ি তৈরি করেছিলেন, যেখানে আমরা থাকতাম। ভারত থেকে আমার দাদা-দাদি যখন এখানে এসেছিলেন, তখন খালিদ বিন ওয়ালিদ রোডের পিইসিএইচএসে আমাদের বাড়ি ছিল। সেই জায়গায় একসময় শুধু শোরুম ছিল এবং আমাদের একটি বাড়ি, ১৫১-সি, ব্লক ২।”
মাহিরা শহরে তার শৈশবের স্মৃতিচারণা করেন। তিনি বলেন, “জয়নাব মার্কেটে যাওয়া আর গলি খাবার যেমন গোলগাপ্পা আর বন-কাবাব খাওয়া আমার খুব প্রিয় ছিল। আজও বন-কাবাব খেলে আমি শৈশবে ফিরে যাই।”
তবে তিনি স্বীকার করেন, বাজারে গোপনে ঘোরার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন। “জয়নাব মার্কেটে ঘুরে বেড়ানো করাচিতে আমার সবচেয়ে প্রিয় কাজ ছিল। আমি খুব অল্প পকেট খরচ পেতাম, কিন্তু তাতেও রুপার গয়না আর চুড়ি কিনতাম। এখনো চুড়ি আমার খুব প্রিয়। আমার ম্যানেজারদের বলি আমাকে নিয়ে যেতে, কিন্তু তারা নেয় না। ভাবি বোরখা পরে যাব, কিন্তু কথা বললেই মানুষ আমাকে চিনে ফেলে।”
মাহিরা খান করাচিকে পাকিস্তানের সবচেয়ে সহনশীল শহর হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “করাচি আপনাকে বিচার করে না। এ শহর আপনাকে জিজ্ঞাসা করে না, আপনি কোথা থেকে এসেছেন বা কে আপনি। আমি মনে করি না, এত শক্তিশালী সহনশীলতা অন্য কোনো শহরে আছে।”
তিনি আরও বলেন, “এখানে বড় হতে হতে আমি হিন্দু, খ্রিস্টান, বোহরি এবং আঘা খানি বন্ধু পেয়েছি। কিন্তু অন্য শহরে গেলে মানুষ এতে অবাক হতো। যা আমার জন্য স্বাভাবিক, তা তাদের কাছে অদ্ভুত লাগত। পৃথিবীর যেকোনো বন্দর শহরের বৈচিত্র্য এমনই।”
তবে মাহিরা করাচিবাসীর শহরটির প্রতি অবহেলার কথাও বলেন। “এ শহর সবাইকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। কিন্তু আমরা একে যত্ন নিই না, যতটা নেওয়া উচিত,” তিনি আক্ষেপ করেন।
সেশনের শেষে মজার র্যাপিড ফায়ার রাউন্ডে অংশ নেন মাহিরা। করাচি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি “বাড়ি”, লাহোরের জন্য “মওলা জাট”, ইমরান খানের জন্য “সাহসী” এবং শাহরুখ খানের জন্য “শৈশবের প্রেম” উল্লেখ করেন।
মাহিরার প্রতি সমালোচনামূলক মন্তব্য করা লেখক খালিলুর রহমান কামার এবং প্রবীণ অভিনেতা ফিরদৌস জামালের কথা জানতে চাইলে মহিরা যথাক্রমে “ভালো লেখক” এবং “অভিজ্ঞ অভিনেতা” বলে মন্তব্য করেন।
বিশ্ব উর্দু কনফারেন্সে মাহিরা খানের ব্যক্তিগত গল্প, শিকড়, এবং করাচি নিয়ে গভীর ভালোবাসা কনফারেন্সে এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে।