স্টাফ রিপোর্টার ।।
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম জাতীয় দলে খেলার সময় যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে আলোচনার ঝড় তুলেছেন। বৃহস্পতিবার এক ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক মনজুরুল ইসলাম এবং নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ (প্রয়াত) তৌহিদ মাহমুদ তাঁকে যৌনভাবে হয়রানি করেছিলেন। জাহানারার অভিযোগ, তাঁর ক্যারিয়ার ধ্বংসের পেছনে দলের সাবেক ও বর্তমান কিছু কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়েরও ভূমিকা রয়েছে।
- অভিযোগের তদন্তে বিসিবির কমিটি, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন
- সরকারের আশ্বাস—আইনি ব্যবস্থা নিলে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে
- তামিম, মাশরাফির আহ্বান—ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে স্বাধীন তদন্ত দরকার
অভিযোগের পর রাত পৌনে ১২টায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘জাতীয় নারী দলের এক সাবেক সদস্যের করা অভিযোগে দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তির অসদাচরণের উল্লেখ রয়েছে। বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিবেচনা করে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন ও সুপারিশ জমা দেবে।’ বোর্ড জানিয়েছে, তারা খেলোয়াড়দের জন্য নিরাপদ, সম্মানজনক ও পেশাদার পরিবেশ নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

জাহানারা আলম
এদিকে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া জানিয়েছেন, জাহানারা যদি আইনি ব্যবস্থা নিতে চান, সরকার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দপ্তর থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। যাঁরা জড়িত, তাঁরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পান, তা নিশ্চিত করা হবে।’
ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) জানিয়েছে, জাহানারার পাশে থাকবে সংগঠনটি। তারা দ্রুত তদন্ত শেষ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছে।

জাহানারা আলম
অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের দুই সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তামিম ইকবাল। মাশরাফি লিখেছেন, ‘আশা করি বিসিবির তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে এবং সত্যতা পেলে দায়ীদের শাস্তি দেবে, যেন ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে।’ তামিম ইকবাল বলেন, ‘অভিযোগগুলো গুরুতর। আমি মনে করি, তদন্তের জন্য বিসিবি নয়, সরকারের অধীনে একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করা উচিত।’
২০১১ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া জাহানারা আলম বাংলাদেশের হয়ে ১৩৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন।
সামগ্রিকভাবে, নারী ক্রিকেটে এই অভিযোগ নতুন করে নিরাপত্তা, মর্যাদা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার প্রশ্ন তুলেছে—যার জবাব এখন দেশের ক্রীড়া প্রশাসনের হাতে।