স্টাফ রিপোর্টার ।।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আওয়ামী লীগ আমলে মসজিদের খুতবা পর্যন্ত কাগজে লিখে পাঠানো হতো। ভেবে আরও দুঃখ হয়, এ দেশেরই কিছু আলেম শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দিয়েছে।” রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মাল্টিপারপাস হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আজ শনিবার দুপুরের এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, জামায়াতের টিকিট কাটলে জান্নাতের টিকিট কাটা হবে—এমন বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, “ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। এসব কথা সমস্যা তৈরি করছে, তাই জনগণের সামনে সত্য তুলে ধরা জরুরি।”
- “এ দেশেরই কিছু আলেম হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দিয়েছে”—মির্জা ফখরুল
- খুতবার ভাষা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আমলে কাগজে লিখে পাঠানো হতো
- ধর্ম ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না: বিএনপি মহাসচিব
- জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ফখরুল
- মিথ্যা মামলা, গুম-হত্যা, ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত
- পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তির অভিযোগ—“মানুষ ওয়ান ম্যান ওয়ান ভোটই বোঝে”
- ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ
‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার কেয়ারটেকারদের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে মসজিদভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষক কার্যক্রম (মউশিক) কেয়ারটেকার কল্যাণ পরিষদ।
সভায় জামায়াত প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে দাঁড়াতে না পারা এই মহলকে জিয়াউর রহমান সুযোগ করে দিয়েছিলেন। পরে বিএনপিও তাদের সঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু গত ১০ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা তারা রাখতে পারেনি।
ছাত্রলীগের ভেতরে জামায়াতপন্থীদের অনুপ্রবেশের অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন ফখরুল। তিনি বলেন, “আমরা তো এসব করতে পারি না। আমরা সামনাসামনি লড়াই করেছি। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, ১৭০০ নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে।”
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিষয়েও কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এখন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলনরত একটি রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, জনগণ ওয়ান ম্যান ওয়ান ভোট পদ্ধতিই বোঝে। চার প্রশ্ন বিশিষ্ট গণভোট জনগণ বিভ্রান্ত করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, দলীয় আনুগত্যের নিরিখে নিয়োগ দেওয়ায় এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, “দলীয় লোক বসালে প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে চলবে না। জাতীয় মসজিদের খতিব পর্যন্ত বদলির সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যায়—এটাই প্রমাণ করে নিয়োগটা রাজনৈতিক ছিল।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মাওলানা শাহ্ মো. নেছারুল হক। বক্তব্য দেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (অব.) মুহাম্মদ রফিক উল ইসলাম, শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান কিরণ, রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ মহিউদ্দিনসহ আরও অনেকে।