ডেস্ক রিপোর্ট ।।
বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম ডে উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাংবাদিকদের সুরক্ষা এবং প্রেসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার (২ মে) তিনি এক্স প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে এই আহ্বান জানান, যেখানে তিনি গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীন গণমাধ্যমের গুরুত্বের উপর জোর দেন।
তারেক রহমান তার বার্তায় বলেন, “সাংবাদিকরা গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। তাদের কাজকে সুরক্ষিত ও সম্মান করতে হবে, আক্রমণ বা সেন্সর করা যাবে না।” তিনি সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসনের (সম্ভবত আওয়ামী লীগ সরকারের) সময়ে বাংলাদেশে প্রেসের স্বাধীনতার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, সেই অন্ধকার সময়ে অনেক বাংলাদেশি সাংবাদিক অদম্য সাহস ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যর্থতার মতো বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করেছেন। দেশের মূলধারার গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক মাধ্যম, দেশে ও বিদেশে সাংবাদিকরা সত্যের সন্ধানে এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য লড়াই করে গেছেন।
তারেক রহমান আরও বলেন, “বিএনপি সেই নতুন ধরনের সাংবাদিকতা থেকে অনুপ্রেরণা নেয়, যা নৈতিকতা ও সততার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখে। আমরা নির্ভীক ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতাকে সম্মান করি, এমনকি যখন তা আমাদের এজেন্ডার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়।” তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত বা ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পোস্টের সাথে বিখ্যাত কার্টুনিস্ট মেহেদী হকের একটি কার্টুন প্রকাশ করা হয়েছে। কার্টুনে একটি বড় মুকুট পরা খালেদা জিয়া জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানকে মুকুট পরিয়ে দিচ্ছেন। প্রতীকী এ কার্টুন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জাতীয় কাউন্সিল ২০০৯ অধিবেশন উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছিলো।
বাংলাদেশে প্রেসের স্বাধীনতার অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগের বিষয়। ২০২২ সালে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স-এর ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬২তম। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর ২০২৩ সালের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইন ব্যবহার করে মুক্ত মত প্রকাশকে দমন করেছে, যার ফলে সাংবাদিকরা নানাভাবে হয়রানি, গ্রেপ্তার এবং সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
তরিক রহমান তার বার্তায় শেষে বলেন, “একটি শক্তিশালী ও টেকসই গণতন্ত্রের জন্য সাংবাদিকতার সততা ও স্বাধীনতা বজায় রাখতে হবে। আসুন আমরা সব পার্থক্য ভুলে একটি এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করবে।”
এই পোস্টের পর এক্স প্ল্যাটফর্মে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন দেখা গেছে। অনেকেই তরিক রহমানের এই বার্তাকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তবে কিছু বিরোধী মতও প্রকাশ পেয়েছে।