ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ।।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা আগের মতো নেই, তাই আসন্ন নির্বাচনই তাঁর জীবনের শেষ নির্বাচন হবে। রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি আপনাদের মানুষ। আমার অনেক বয়স হয়েছে। কত দিন বাঁচব জানি না। আমি এই আসন থেকে নির্বাচন করি, কখনো হেরেছি, কখনো জিতেছি, কিন্তু আপনাদের ছেড়ে যাইনি। আমি বলেছি, এটা আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। নির্বাচনের সময় আমার শক্তি থাকবে কি না জানি না। তাই আমার শেষ নির্বাচনে আমাকে সাহায্য করবেন, সহযোগিতা করবেন। আমাকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ করে দেবেন।”
- ঠাকুরগাঁও আসন থেকেই লড়বেন নিজের শেষ নির্বাচনে
- গণভোট ও সনদের মতো বিষয় চাপিয়ে দিচ্ছে বিদেশফেরত শিক্ষিতরা, অভিযোগ ফখরুলের
- ১৫ বছর পর মানুষ শুধু ভোট দিতে চায়, বললেন বিএনপি মহাসচিব
- শেখ হাসিনার দেশত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ‘আমরা দেশের মাটি ছেড়ে যাব না’
- বিএনপি ক্ষমতায় এলে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি
সভায় তিনি বলেন, দেশের বর্তমান সংকট সাধারণ মানুষের নয়, বরং নাটকীয়ভাবে তৈরি করা একটি অবস্থা। তাঁর দাবি, “গত ১৫ বছর আমরা কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারিনি। ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করেছিলাম, ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়েও আগের রাতেই ভোট নিয়ে নেওয়া হয়। এবার আমরা সবাই ভোট দিতে চাই।”
গণ–অভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আল্লাহর রহমতে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। নিজের দলের কর্মীদের অসহায় অবস্থায় ফেলে দিয়েছেন। এতে বোঝা যায়, জনগণের প্রতি তাঁর কোনো দরদ নেই। আমরা দেশের মানুষ, দেশের মাটিতেই জন্ম, এখানেই মৃত্যুবরণ করব, কিন্তু দেশ ছেড়ে যাব না।”
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের কষ্ট বোঝে না। “বাজারে ধানের দাম নেই, আলুতেও কৃষক ধরা খেয়েছেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষক যেন তাঁর ফসলের ন্যায্য দাম পান, সেই ব্যবস্থা করা হবে,” যোগ করেন তিনি।
গণভোট ইস্যুতে তিনি মন্তব্য করেন, “কয়েকটা দল বলছে, নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। আমরা বলছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে। গণভোট, সনদ—এসব বোঝেন শিক্ষিত কিছু ওপরতলার লোক, যারা আমেরিকা থেকে এসে এসব আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন।”
মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।