শনিবার, ডিসেম্বর ৬, ২০২৫

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, পাল্টা হুমকিতে তেতে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য

by ঢাকাবার্তা
ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সফলভাবে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় সময় শনিবার রাত আটটার কিছু আগে ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ লিখেন, ‘আমরা ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে হামলা চালিয়েছি। সব উড়োজাহাজ নিরাপদে ফিরে এসেছে।’ এরপর রাত ১০টায় হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানে ট্র্যাজেডি ঘটবে।”

এই হামলার পরপরই ইরান হুঁশিয়ারি দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। আয়াতুল্লাহ খামেনির উপদেষ্টা হোসেইন শরিয়তমাদারি বলেন, “কোনো বিলম্ব না করে বাহরাইনে মার্কিন নৌবহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে এবং হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়া হবে।” ইরানের রক্ষণশীল কণ্ঠ হিসেবে পরিচিত শরিয়তমাদারির এই বক্তব্য কায়হান পত্রিকা টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই সংঘর্ষকে “বিপজ্জনক উত্তেজনা” হিসেবে উল্লেখ করে সতর্ক করেছেন যে, এই পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে এবং এর ভয়াবহ পরিণতি সারা বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। তিনি কূটনৈতিক সমাধান ও উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানান।

ইরানের ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনা

ইরানের ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, “ইরান যদি প্রতিশোধ নেয়, তাহলে তার চেয়েও বেশি শক্তি প্রয়োগ করে জবাব দেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “মহান মার্কিন যোদ্ধাদের অভিনন্দন, এখন শান্তির সময়।”

এর আগে ট্রাম্পের দল এবং হোয়াইট হাউসের ভেতরের কিছু উপদেষ্টা তাঁকে বোমা হামলা থেকে বিরত রাখতে চেয়েছিলেন। এমনকি হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাত্র দুই দিন আগেই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি এখনও নিশ্চিত নন—যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই যুদ্ধে জড়াবে কি না। ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ এবং আগাম তথ্য বিনিময়ের বিষয়েও দ্বিধায় ছিলেন তিনি।

হামলার রাতে ট্রাম্প কানাডার জি-৭ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সে সময় তিনি ‘সবচেয়ে বড়টি ফেলতে হবে’ বলে মন্তব্য করেন, যার ইঙ্গিত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকার-বিধ্বংসী বোমার দিকে।

ট্রাম্পের সমর্থকেরা এই হামলাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাহসী পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখালেও, তাঁর সমালোচকেরা বলছেন—এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের সূচনা হতে পারে। উল্লেখ্য, ট্রাম্প এর আগেও ২০২০ সালে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা নিয়ে তখন ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বিত হামলার ফলে ইরান সাময়িকভাবে দুর্বল হলেও, দীর্ঘমেয়াদে তা বড় ধরনের আঞ্চলিক সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সিএনএন ও আল–জাজিরা।

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net