শুক্রবার, আগস্ট ৮, ২০২৫

আইএমএফের ঋণের শর্তের তুলনায় কর আদায় কম

২০২২ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুনের মধ্যে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ ৪৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা।

by ঢাকাবার্তা ডেস্ক
আইএমএফের ঋণের শর্তের তুলনায় কর আদায় কম

বাণিজ্য ডেস্ক।।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত অনুযায়ী গত অর্থবছরে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের কথা ছিল এর চেয়ে ১৭ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। ২০২২ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুনের মধ্যে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ ৪৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরে সরকার মোট কর আদায় করেছে তিন লাখ ২৭ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা।আইএমএফ’র প্রায় ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির শর্ত পূরণে অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে গত অক্টোবরে সংস্থাটির প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছিল।

 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কর আদায় ও রিজার্ভ সংক্রান্ত দুটি শর্ত পূরণে সরকারের অপারগতার বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে।’ ‘সরকার এই অপারগতার কারণগুলোও ব্যাখ্যা করেছে’ উল্লেখ করে তিনি জানান, তবে সরকার দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

আগামী ১১ বা ১২ ডিসেম্বর আইএমএফ’র বোর্ড মিটিংয়ে এই ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য তোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার অর্থ বিভাগ গত অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আদায় করা কর, এনবিআর বহির্ভূত কর ও রাজস্ব থেকে সরকারের মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৬৫ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা এবং লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার লাখ ৩২ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা।

তবে এনবিআর’র রাজস্ব আদায় আগের বছরের তুলনায় নয় দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১৯ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা।এনবিআর’র সংশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর দেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে সরকার আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়েছে।’

দ্বিতীয় কিস্তির জন্য আইএমএফের আরেকটি শর্ত ছিল, গত অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি এক লাখ ৬৮ হাজার ৬৪০ কোটি টাকার বেশি হতে পারবে না। তবে গত অর্থবছরে দেশের বাজেট ঘাটতি ছিল এক লাখ ৯৮ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। ওই কর্মকর্তা জানান, সরকারের সুদ পরিশোধ ও অনুদানের অর্থ বাদ দিয়ে আইএমএফ বাজেট ঘাটতির শর্ত পর্যালোচনা করবে। গত অর্থবছরে সরকার সুদ পরিশোধ করেছে ৮৩ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা এবং বিদেশি অনুদান পেয়েছে দুই হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা।

 

গত অর্থবছরে সরকারের প্রকৃত বাজেট ছিল প্রায় সাত লাখ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেট দাঁড়ায় ছয় লাখ ৬০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। সরকার সংশোধিত বাজেট থেকে পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।খরচ কমানোর মধ্য দিয়ে সরকার বাজেট ঘাটতি কমাতে পেরেছে।

 

আইএমএফ চায় বাংলাদেশ সরকার বাজেট ঘাটতি জিডিপির পাঁচ শতাংশের মধ্যে রাখুক। সংশোধিত বাজেটে বাংলাদেশের বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল জিডিপির পাঁচ দশমিক ১২ শতাংশ। তবে শেষ পর্যন্ত বাজেট ঘাটতি হয়েছে জিডিপির চার দশমিক ৪৬ শতাংশ।

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net