রুমিন ফারহানা ।।
৭ জানুয়ারি একটি নাটক মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে। এটাকে কোনোভাবেই ভোট বলা যাবে না। প্রথম কারণ হচ্ছে, কোন দল সরকার গঠন করবে, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সবাই এসব জেনে গেছে। কোন আসনে কে সংসদ সদস্য হবেন, তার তথ্যও বেরিয়েছে। এটাকে ভোট বলছি না এ কারণে যে এই ভোটে কাউকে নির্বাচিত করার বা কাউকে হারিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবকিছু আগে থেকে নির্ধারিত হয়ে আছে।
মানুষ বেছে নেওয়ার কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এবারের ভোটে নৌকাকে বেছে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন করা হয়েছে যে মানুষকে হয় নৌকা, নয়তো নৌকার স্বতন্ত্র প্রার্থী বা নৌকা–সমর্থিত জাতীয় পার্টি অথবা আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত কোনো প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে। যাকেই ভোট দিক না কেন, ভোট দিন শেষে এক জায়গাতেই যাবে। এটাকে আর যা–ই বলা হোক না কেন, নির্বাচন বলার কোনো কারণ দেখি না।
আমরা দেখিয়েছি অতি অহিংস উপায়ে ভীষণ রকম সহিংস একটা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া যায়। ইতিমধ্যে আমাদের দলের মহাসচিব, জ্যেষ্ঠ নেতাসহ ৩০ হাজার নেতা-কর্মীকে জেলে নেওয়া হয়েছে। মাঠের নেতারা আত্মগোপনে আছেন। এমন একটি অবস্থায় দাঁড়িয়ে এই লড়াইটা ভীষণ কঠিন। আমাদের শুধু একটি দলের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে না, পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে।
মানুষ এমনিতেই বুঝতে পেরেছে আসলে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না, তামাশা হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা বলছে, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা যা দেওয়া হয়েছে, তা কেড়ে নেওয়া হবে, যদি ভোটকেন্দ্রে না যায়। দেখা যাবে কিছু অর্থের বিনিময়ে লোকজনকে এনে কেন্দ্রের সামনে সকাল থেকে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে।
সরকার কাউকে ভয় দেখাচ্ছে, আবার অনেককে নানাভাবে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে। কোথাও কোথাও বলা হচ্ছে, নৌকায় ভোট না দিলে এলাকায় ঢুকতে দেবে না। এরপরও বহু মানুষ সাহস করে সরকারের এই প্রহসন থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ভোটের পরও বিএনপির শান্তিপূর্ণ অহিংস আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপি