বিদেশ ডেস্ক।।
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করতে যেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন বিরোধী নেতা মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সমর্থকরা। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির কয়েক কিলোমিটার আগ থেকেই জড়ো হওয়া কয়েক ডজন সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) তাদের আটক করা হয়েছে। গত সপ্তাহে দিল্লির এই মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতারের ঘটনার প্রতিবাদে আজ তারা মোদির বাসভবনের সামনে মিছিলের চেষ্টা করেছিলেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
ভারতের একজন প্রধান বিরোধী নেতা কেজরিওয়াল। তার আম আদমি পার্টি (এএপি) এক দশক ধরে জাতীয় রাজধানী অঞ্চল শাসন করছে। ভারতের সাধারণ নির্বাচনে ভোট শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। কেজরিওয়ালকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হেফাজতে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। এজেন্সির আইনজীবী বলেছেন, ‘তিনি এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি ছিলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।’
কেজরিওয়ালের দলের প্রধান নেতারা এখন এই মামলায় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। দলটি বলেছে, কেজরিওয়ালকে একটি ‘বানোয়াট মামলায়’ গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে যে কোনও ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ফেডারেল সরকার এবং মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
মঙ্গলবার কেজরিওয়ালের সমর্থকরা মোদির বাসভবনের দিকে মিছিল করার চেষ্টা করেছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার (৩ মাইল) দূরে জড়ো হওয়া বিরোধী নেতার সমর্থকদের বাধা দেয় পুলিশ। টেলিভিশন চিত্রে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে মাটিতে বসে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। এসময় পুলিশ কর্মীরা তাদের বাসে তোলার চেষ্টা করেছিলেন।
এদিকে, শহরের অন্য স্থানে আবার মিছিলে নেমেছিলেন বিজেপির সমর্থকরা। কেজরিওয়ালের পদত্যাগের দাবিতে দিল্লি সচিবালয়ে মিছিল করার চেষ্টা করেছিলেন তারা। এসময় বিজেপি সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করেছিল পুলিশ। তাদের কয়েকজনকে আটক করাও হয়।
একটি বিজ্ঞপ্তিতে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ‘বিশেষ আইন ও শৃঙ্খলা ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে’ শহরের ট্র্যাফিক প্রভাবিত হবে। সাধারণ নির্বাচনে বিজেপিকে যৌথভাবে চ্যালেঞ্জ করার জন্য গত বছর দুই ডজনেরও বেশি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত হয় ‘ইন্ডিয়া’ জোট। এএপি এই জোটের অংশ। আসন ভাগাভাগি করার প্রচেষ্টা এবং ব্যর্থতার পর জোটটি এবার কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য ৩১ মার্চ দিল্লিতে একটি যৌথ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে। এই সমাবেশের লক্ষ্য বিজেপির বিরুদ্ধে সাধারণ প্রার্থীদের মাঠে নামানো এবং জোটটির মধ্যে আবারও ঐক্য ফিরিয়ে আনা।
গ্রেফতার হওয়া কেজরিওয়ালের দল উত্তর ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যও শাসন করে। তার গ্রেফতারের ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই মামলায় ‘মৌলিক গণতান্ত্রিক নীতি’র সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একটি ‘ন্যায্য’ এবং ‘নিরপেক্ষ’ বিচারের জন্য আবেদন করেছে জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল গ্রেপ্তার