চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ।।
বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা প্রায় ছয় হাজার কনটেইনার দ্রুত নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কনটেইনার জট কমানো ও কার্যকর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, “বন্দরে ৬ হাজার কনটেইনার দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। এগুলো নিলামে তুলে বন্দরের জট নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছি। ইতিমধ্যে একটি নিলামের আয়োজন হয়েছে। প্রথম নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাকে আমরা দিয়ে দেব। নিলাম করতে করতে যাতে সময় নষ্ট না হয় সে জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও ব্যবহারকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও জানান, সাবেক সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়িগুলো নিলামের পরিবর্তে বিক্রির নতুন কৌশল নেওয়া হতে পারে। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “গাড়িগুলো আমরা নিলামে দিয়েছিলাম। তবে আশানুরূপ ফল পাইনি। এখন আমরা কিছু বিকল্প চিন্তা করছি। যেমন কোনো কোনো সরকারি সংস্থা প্রস্তাব দিয়েছে, তারা ৬০ শতাংশ দামে গাড়িগুলো নিতে চায়। আমরা জলের দরে বিক্রি করতে চাই না। এগুলোর একেকটি গাড়ির দাম ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। যদি উপযুক্ত দাম না পাই, তাহলে আরও ভালো ব্যবহার কীভাবে করা যায়, তা সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব। এসব গাড়ি বছরের পর বছর ফেলে স্ক্র্যাপ করার পক্ষে নই। অচিরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তৎকালীন সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় এসব গাড়ি আমদানি করেন। পরে সরকারের মেয়াদ শেষে গত ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে গেলে এবং শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল হলে, গাড়িগুলো তারা ফেলে রেখে যান। মোট ৪২টি গাড়ির মধ্যে ২৪টি গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় নিলামে তোলা হয়েছিল। তবে গাড়িভেদে সর্বোচ্চ ১ লাখ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দর ওঠে, যা বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সেগুলো ছাড় দেয়নি।
চট্টগ্রাম সফরে এনবিআর চেয়ারম্যান সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সংগঠনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলমসহ অন্যান্য নেতারা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিদ্যমান নানা সমস্যা ও প্রক্রিয়াগত জটিলতা তুলে ধরেন। এনবিআর চেয়ারম্যান তাদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেন এবং সমাধানের আশ্বাস দেন।