কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ।।
ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগে কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ (পুতুল) ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন তহমুল ইসলাম (২৭) নামের এক তরুণ।
মামলায় শেখ হাসিনাকে ১ নম্বর, শেখ রেহানাকে ২ নম্বর, এবং আবদুল হামিদকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরও ২০০ থেকে ২৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। মামলায় আবদুল হামিদের নামের বানান ‘আঃ হামিদ’ উল্লেখ করা হয়েছে।

বঙ্গভবন ছাড়ছেন সস্ত্রীক আবদুল হামিদ
মামলার বাদী তহমুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ সদরের উত্তর লতিবাবাদ এলাকার আবু তাহের ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি বিএনপির কর্মী এবং ছাত্র আন্দোলনের সময় আহত হয়েছিলেন। তহমুল জানান, আহত অবস্থায় দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে এখন কিছুটা সুস্থ হওয়ায় তিনি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমন করতে সারা দেশে সহিংসতার পরিকল্পনা করা হয়। এতে দেশ-বিদেশে থাকা প্রথম সারির আসামিরা কিশোরগঞ্জে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশ বাস্তবায়নে স্থানীয় নেতাকর্মীরা অস্ত্র, বোমা ও অর্থ সরবরাহ করে হামলা চালান।

শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা
গত বছরের ৪ আগস্ট কিশোরগঞ্জের স্টেশন রোডে ছাত্র-জনতার মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল, গ্রেনেড ও বোমা ব্যবহার করা হয়। এ সময় বাদীসহ অনেকে আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে গণহত্যার পরিকল্পনার অভিযোগও আনা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, মামলাটি তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় এ পর্যন্ত ১১টি মামলা হয়েছে। জেলায় প্রায় অর্ধশত মামলায় চার হাজার জনের নাম উল্লেখসহ ১০ হাজারের বেশি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বোন আছিয়া আলম, ভাই আবদুল হক নূরু (মাঝে) ও ভাতিজা শরিফ কামাল।
এছাড়া, গত ১৭ আগস্ট কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে দুটি মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বোন সদস্য সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আছিয়া আলম, ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল হক নূরু ও ভাতিজা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শরিফ কামালসহ ৯২ জনকে আসামি করা হয়েছে। উপজেলায় ৫ আগস্ট দুপুরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিজয়মিছিলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হামলার অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়।