দূরবর্তী অঞ্চল ও প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের জন্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে এবার ভারতে কার্যক্রম শুরু করতে চলেছে বিশ্বখ্যাত উদ্যোগপতি ইলন মাস্কের উপগ্রহ-ভিত্তিক ইন্টারনেট প্রকল্প স্টারলিঙ্ক। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি এখন মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইতিমধ্যেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এই পরিষেবা। এবার ভারতের গ্রামীণ ও পাহাড়ি অঞ্চলেও সেই সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে স্টারলিঙ্ক। প্রথম ধাপে আগামী বারো মাসের মধ্যেই কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় পরিষেবা শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে।
ভারতের জন্য প্রস্তাবিত খরচ সাধারণ মানুষের জন্য কিছুটা বেশি হলেও, যেসব এলাকায় অন্য কোনো ইন্টারনেট সংযোগ নেই, সেখানে এটি হতে পারে অন্যতম ভরসাযোগ্য মাধ্যম। জানা গেছে, মাসে আনলিমিটেড ডেটা ব্যবহারের খরচ ধরা হয়েছে প্রায় তিন হাজার টাকা। পাশাপাশি একবারের জন্য প্রয়োজন হবে একটি যন্ত্রাংশ স্থাপনের খরচ, যা প্রায় তেত্রিশ হাজার টাকা হতে পারে।
স্টারলিঙ্ক মূলত পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে ঘুরতে থাকা ছোট ছোট উপগ্রহ ব্যবহার করে ইন্টারনেট সরবরাহ করে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন সব জায়গায় সংযোগ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব, যেখানে মোবাইল টাওয়ার বা তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট পৌঁছানো কঠিন।
এশিয়ার জাপান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, ভুটান ও বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই চালু রয়েছে এই পরিষেবা। সেই তুলনায় ভারত কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও সরকারি ছাড়পত্র পাওয়ার পর এখন অনেকটাই এগিয়ে এসেছে স্টারলিঙ্ক।
তবে এখনও কিছু জটিলতা রয়েছে। ভারতের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে উপগ্রহ তরঙ্গ ব্যবহারের বিষয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ মঞ্জুর হয়নি। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই পূর্ণ মাত্রায় পরিষেবা চালু করতে পারবে স্টারলিঙ্ক।
ভারতের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ নির্মাণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। একবার চালু হলে দেশের হাজার হাজার দুর্গম জনপদে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে যাবে। ফলে শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যপরিষেবা ও তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার ঘটবে ব্যাপক হারে। ডিজিটাল ভারতের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ইলন মাস্কের এই প্রকল্প হতে পারে বড় এক পালাবদল।