ডেস্ক রিপোর্ট ।।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ সংঘাতের পর কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে আজ রোববার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে বহুল প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজিদ আল–আনসারি এক বিবৃতিতে জানান, এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী আজ ইসরায়েলের তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসেম বিগ্রেডের মুখপাত্র আবু ওবেইদা এক ঘোষণায় মুক্তিপ্রাপ্ত তিন ইসরায়েলি নাগরিকের নাম প্রকাশ করেন। তারা হলেন রোমি গোনেন (২৪), এমিলি দামারি (২৮) এবং দোরোন স্টেইনব্রিচার (৩১)। মুখপাত্রের দাবি, চুক্তির শর্ত মেনে হামাস এই জিম্মিদের মুক্তি দিচ্ছে।

যুদ্ধবিরতির পর গাজাবাসীর উল্লাস
এর আগে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয় যে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরে তিন ঘণ্টা বিলম্ব হবে। যদিও চুক্তি অনুযায়ী আজ সকাল সাড়ে আটটায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, কয়েক ঘণ্টা পরে তা কার্যকর হয়।
ইসরায়েলের জোট সরকারের মন্ত্রিসভা গত শনিবার ভোরে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করে। এর আগের দিন শুক্রবার জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা চুক্তিটি পাস করে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। একই সঙ্গে আড়াই শ’র বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলা শুরু হয়।

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর গাজা শহরে আনন্দ
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মাধ্যমে গাজায় দীর্ঘদিনের সংঘাত সাময়িকভাবে থামলেও এর স্থায়ী সমাধান নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে আলোচনার সম্ভাবনা তৈরি হলেও চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছাতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টাই এই অঞ্চলে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় হতে পারে।