স্টাফ রিপোর্টার ।।
গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে গুমসংক্রান্ত কমিশন। কমিশন তাদের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন তাদের প্রতিবেদনে ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮টি অভিযোগ যাচাই করেছে, এবং গুমের শিকারদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এবং তার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহায়তায় গুমের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, এনটিএমসি’র সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, এবং পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ উল্লেখযোগ্য।
কমিশনের প্রধান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা এ কাজটি এমনভাবে করেছেন যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়। বিভিন্ন বাহিনী একে অপরের সাথে ভুক্তভোগী বিনিময় করেছে এবং পরিকল্পনা ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে।”

প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে কমিশন।
তিনি আরও জানান, অনেক গুমের শিকার এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, যাদের ওপর প্রচণ্ড নির্যাতন চালানো হয়েছে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা এবং তাদের সঠিক বিচার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তিনি কমিশনকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “যদি আমি আয়নাঘর পরিদর্শন করি, তবে ভিকটিমরা অভয় পেতে পারে।”
ড. ইউনূস কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী সময়ে আরও সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
কমিশন প্রধান জানান, মার্চ মাসে আরও একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেওয়া হবে, এবং চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে।
কমিশনের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস, এবং মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন।