ঢাকাবার্তা ডেস্ক ।।
ভারত-বাংলাদেশের চলমান উত্তেজনা নিরসনে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মতে, দুই দেশের মধ্যে সংলাপ চালু রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত থাকার কারণে পশ্চিমবঙ্গ ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে মমতা বলেন, “বাংলাদেশের আঁচ যদি কেউ এখানে এনে আগুন লাগায়, তাহলে বিহারও বাদ যাবে না। কারণ, আমরা সবাই পরস্পরের সঙ্গে জড়িত।”
শুক্রবার নিউজ১৮ বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মমতা বলেন, “ভারত-বাংলাদেশের সমস্যাগুলি নিজেদের মধ্যে বসে সমাধান করা উচিত। এ জন্য অনেক আন্তর্জাতিক ফোরাম রয়েছে, কিন্তু আলোচনার পথ বন্ধ করা ঠিক নয়। আমার মতে, দুই দেশ অস্থিরতা কাটিয়ে সুস্থির পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাক।”
পার্লামেন্টে বিবৃতি দেওয়ার দাবি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পার্লামেন্ট অধিবেশনে বাংলাদেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত। আগে নিয়ম ছিল, পার্লামেন্ট চলাকালে কোনো বড় ঘটনা ঘটলে বা প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর থেকে ফিরলে সংসদে বিবৃতি দিতেন। কিন্তু বর্তমানে আমরা তা দেখতে পাচ্ছি না। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত জানানো উচিত ছিল।”
শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রসঙ্গ
শান্তিরক্ষী বাহিনী নিয়ে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মমতা বলেন, “যখন কোনো দেশে অস্থিরতা দেখা দেয়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী সেখানে কাজ করে। শ্রীলংকাতেও গণ্ডগোলের সময় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন হয়েছিল। যদি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি ঘটে, ভারত জাতিসংঘকে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর অনুরোধ করতে পারে। এতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে, সব বাংলাদেশি ওপার বাংলার নয়। ভাষা, সংস্কৃতি, এবং পারিবারিক সম্পর্ক আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছে। আমরা চাই, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই ভালো থাকুক। ভূরাজনৈতিক সীমারেখা থাকলেও আমাদের হৃদয়ের কোনো সীমা নেই।”
প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক
মমতা বলেন, “বাংলা উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার। আমাদের সীমান্ত নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, এবং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে। ভারতের পররাষ্ট্রনীতির দুর্বলতায় প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার অনেক কথা আছে, তবে আমি তা প্রকাশ্যে বলবো না। কারণ, আমার দেশই আমার পরিচয়।’”
মমতার এই বক্তব্য দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।