সিলেট প্রতিনিধি ।।
সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপে প্রায় ছয় বছর বন্ধ থাকার পর আবারও গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। প্রতিদিন ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। কূপটিতে মজুত আছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। বড় ধরনের কোনো ত্রুটি না হলে আগামী ১০ বছর এই কূপ থেকে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের গ্যাস উত্তোলন সম্ভব।
বৃহস্পতিবার প্রাথমিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে এসব তথ্য জানান সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জলিল প্রামাণিক।
কর্মকর্তারা জানান, ১৯৬১ সালে খনন করা হয় কৈলাশটিলার এই কূপটি। খননের পর ছয়টি স্তরে গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ১৯৮৩ সালে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। সর্বশেষ চতুর্থ স্তর থেকে ওয়ার্কওভারের সময় ২০১৯ সালে কূপটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।
- ৬ বছর বন্ধ থাকার পর ১ নম্বর কূপে আবার গ্যাস মজুতের প্রমাণ
- নতুন স্তরে মজুত প্রায় ২০ বিলিয়ন ঘনফুট
- প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে পারে ৫০–৬০ লাখ ঘনফুট গ্যাস
- ১০ বছর পর্যন্ত উত্তোলনের সম্ভাবনা
- এলএনজি আমদানির হিসেবে সাশ্রয় হবে প্রায় ৩,৩০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা
- দুই–তিন দিনের মধ্যেই জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু করার আশা
২০২৩ সালে সরকার পুরোনো কূপগুলো পুনরায় ওয়ার্কওভারের সিদ্ধান্ত নেয়। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের অন্যান্য প্রকল্পের পাশাপাশি কৈলাশটিলাসহ তিনটি কূপের জন্য ২২০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। গত ১২ আগস্ট বাপেক্স এই কূপের ওয়ার্কওভার কাজ শুরু করে। প্রায় তিন মাস কাজ শেষে ১২ নভেম্বর প্রাথমিক পরীক্ষা চালানো হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্তৃপক্ষ। ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, দুই হাজার ২০০ মিটার গভীরে কূপটিতে নতুন একটি স্তর পাওয়া গেছে—যেখান থেকে আগে কখনও গ্যাস উত্তোলন হয়নি। তথ্য–উপাত্ত অনুযায়ী সেখানে প্রায় ২০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কূপে বর্তমান চাপ অনুযায়ী প্রতিদিন ৫০–৬০ লাখ ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে দেওয়া সম্ভব। এই হারে উত্তোলন হলে আগামী ১০ বছর গ্যাস পাওয়া যাবে।
মজুত গ্যাসের আনুমানিক মূল্য জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে যে দামে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করা হয়, সেই হিসাবে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
জাতীয় গ্রিডে কবে থেকে গ্যাস সরবরাহ করা যাবে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কূপটি যেহেতু পুরোনো এবং প্রসেস প্লান্টের সঙ্গে সংযুক্ত, তাই দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা যাবে।