স্টাফ রিপোর্টার ।।
রাজধানীর মিরপুরে ঐতিহ্যবাহী বেনারসিশিল্পের আধুনিকায়ন ও বহুমুখীকরণে সহায়তা করছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশন। আধুনিক তাঁত সরঞ্জাম সরবরাহ এবং ডিজিটাল ডিজাইনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমিয়ে শিল্পীদের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তারা বেনারসিশিল্পের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পৃথক বেনারসিপল্লি স্থাপনের দীর্ঘদিনের দাবি আবারও তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার মিরপুরে ১০ দিনব্যাপী পণ্য বৈচিত্র্যকরণ প্রশিক্ষণের সমাপনী, পণ্য প্রদর্শনী ও শিল্প এলাকা পরিদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা উঠে আসে। এতে সভাপতিত্ব করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান এবং প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা খান এবং ধন্যবাদ জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বেনারসি শাড়িকে দেশ-বিদেশে জনপ্রিয় করতে এসএমই ফাউন্ডেশন নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এসএমই মেলা, হস্তশিল্প প্রদর্শনী এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে অংশগ্রহণ। এছাড়া মান বজায় রেখে ব্র্যান্ডিং ও প্যাকেজিং উন্নয়নের মাধ্যমে বাজারমূল্য বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সহজ শর্তে ঋণসুবিধা নিশ্চিত করতে ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে ফাউন্ডেশন, যা উদ্যোক্তাদের মূলধন সংকট অনেকাংশে কমিয়েছে।
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেন, বেনারসিশিল্পের বিকাশে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সুস্পষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হলে সরকার প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেবে।
উদ্যোক্তারা বলেন, ২০০৩ সালে ভাষানটেকে বেনারসিপল্লির জন্য প্লট চেয়ে আবেদন করা হলেও এখনো সাড়া মেলেনি। তাঁরা মনে করেন, প্লট বরাদ্দ পেলে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পের প্রসার ও সংরক্ষণ সম্ভব হবে।
তাঁরা আরও বলেন, হাতে বোনা একটি বেনারসি শাড়ি তৈরি করতে যেখানে ১০ দিন থেকে এক মাস সময় লাগে, সেখানে ভারত থেকে অবৈধভাবে আমদানিকৃত নিম্নমানের পলিয়েস্টার শাড়ি কম দামে বাজার দখল করছে। এর ফলে স্থানীয় তাঁতিরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না। যদিও মিরপুর বেনারসি ইতোমধ্যে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ পেয়েছে, তারপরও বাজার সুরক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশের জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩২ শতাংশ এবং প্রায় আড়াই কোটি মানুষ এই খাতে নিয়োজিত। এই খাতের উন্নয়নে নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে ফাউন্ডেশন।
বক্তারা বলেন, সরকারি-বেসরকারি যৌথ প্রচেষ্টায় বেনারসিশিল্প আবারও তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে এবং দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।