চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ।।
আগামী বছর মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম ও সমসাময়িক ব্যাংকিং ইস্যুতে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, “সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি এখন স্বস্তিদায়ক অবস্থানে আছে। গত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮-৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আগের ১৩-১৪ শতাংশের তুলনায় অনেকটাই কম।”
সংবাদ সম্মেলনে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারেও গুরুত্ব দিয়ে কথা বলেন গভর্নর। তিনি বলেন, “ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে পাচার করা সম্পদের বড় একটি অংশ জব্দ করা হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। কিছু বিদেশি আইনগত প্রতিষ্ঠানকে এ কাজে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে।”
তিনি জানান, এই উদ্যোগ দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সমন্বয় করে সম্পন্ন করতে হবে। কোন দেশে কী পরিমাণ সম্পদ আছে, তা নির্ধারণ করে যথাযথ আদালতের মাধ্যমে সেই সম্পদ জব্দ করা হবে।
পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, “সব মিলিয়ে আমার ধারণা, আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের বড় শিল্প গ্রুপগুলোর নাম রয়েছে। বেক্সিমকোর পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণই ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো।”
তবে সব ক্ষেত্রে আদালতের মাধ্যমে সমাধান সম্ভব নয় বলেও মত দেন গভর্নর। তাঁর ভাষায়, “আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্টের একটা বিষয় আছে। সব তথ্য হাতে নিয়ে তারপর নেগোশিয়েশনে যাওয়া উচিত। তা না হলে আমরা ঠকে যেতে পারি।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে কারও জড়িত থাকার প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “অমূলক অভিযোগে কাউকে চাকরিচ্যুত করার পক্ষে নই। তবে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে যাঁদের বিরুদ্ধে তথ্য আছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, বিএফআইইউর পরিচালক মো. আনিসুর রহমান এবং চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।