স্টাফ রিপোর্টার ।।
দেশের ব্যাংকে গ্রাহকদের জমাকৃত মোট আমানতের অর্ধেকের বেশি অর্থই ঢাকা জেলায় কেন্দ্রীভূত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যাংকের মোট আমানতের প্রায় ৫২ শতাংশ, যা ৯ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকার মতো, ঢাকার জেলাতেই জমা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকগুলোতে জমা মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর বড় অংশই জমা হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের নামে।
মতিঝিল শীর্ষে, গুলশান দ্রুত এগোচ্ছে
ঢাকার ৫৭ থানা থেকে ব্যাংকে জমা হওয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মধ্যে মতিঝিল অঞ্চল শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। মতিঝিলের আমানতের পরিমাণ ২ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি, যা দেশের মোট আমানতের প্রায় ১১ শতাংশ। গুলশান দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে, যেখানে আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুলশানে বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় স্থানান্তর ও করপোরেট হাউসগুলোর উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় গুলশান দ্রুত মতিঝিলকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে।
অন্য এলাকার চিত্র
বনানী, ধানমন্ডি, পল্টন, এবং তেজগাঁও থানা এলাকাগুলোও ব্যাংক আমানতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবস্থানে রয়েছে। বনানীর গ্রাহকদের আমানতের পরিমাণ প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ২.৯ শতাংশ। পল্টন, ধানমন্ডি এবং তেজগাঁও এলাকার গ্রাহকেরাও যথাক্রমে ৪২ হাজার, ৫০ হাজার, এবং ৪১ হাজার কোটির বেশি টাকা জমা রেখেছেন।
স্বল্প আমানতের এলাকা
ঢাকা জেলার মধ্যে সবচেয়ে কম আমানত জমা হয়েছে ভাষানটেক এলাকায়, যেখানে গ্রাহকদের মোট আমানত ২৪০ কোটি টাকা। গেন্ডারিয়া, উত্তরখান, কামরাঙ্গীরচর, এবং মুগদা এলাকাগুলোও কম আমানতের তালিকায় রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মন্তব্য
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বলেন, “যেসব এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম বেশি, সেখানেই আমানতের পরিমাণ বেশি। মতিঝিল, গুলশানসহ ঢাকার বাণিজ্যকেন্দ্রিক এলাকাগুলো এর স্পষ্ট উদাহরণ।”
এই তথ্য-উপাত্ত ব্যাংক খাতের আঞ্চলিক বৈষম্য এবং আর্থিক কার্যক্রমের কেন্দ্রীভূত প্রকৃতিকে তুলে ধরে, যা ভবিষ্যতে নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।