বিশেষ প্রতিনিধি ।।
আওয়ামী লীগের শাসনামলের তিনটি জাতীয় নির্বাচন চরম বিতর্কিত ছিল। একতরফা ও জালিয়াতির এই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকা সরকারের বৈধতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এসব নির্বাচনে বড় ভূমিকা পালন করা নির্বাচন কমিশনগুলোর ওপর এবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এবার ফাঁসছেন সেইসব প্রধান নির্বাচন কমিশনার। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের অর্থ তছরুপ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের তদন্ত শুরু করছে।
দুদকের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের অর্থ তছরুপ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনী অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত শুরু হচ্ছে।
দুদক সূত্র জানায়, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ব্যয়ের হিসাব, রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের অনিয়মসহ নানা বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি সাবেক সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের সম্পদের হিসাবও তলব করা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই তিনটি নির্বাচন বিতর্কিত হওয়ার মূল কারণ ছিল জনমত উপেক্ষা করে দলীয় স্বার্থে কাজ করা। যেমন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ২৬৪ কোটি টাকা, ২০১৮ সালের ‘রাতের ভোটে’ ৭০০ কোটি টাকা এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রায় ২৩শ কোটি টাকা ব্যয় হয়।
২০১৮ সালের নির্বাচনে ‘রাতের ভোট’ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডামি প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনের বৈধতা প্রতিষ্ঠার মতো ঘটনাগুলো বিশেষভাবে অনুসন্ধানের আওতায় আসতে পারে। দুদক সূত্র জানিয়েছে, পরিকল্পনামাফিক এই তদন্তে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের সমস্ত প্রমাণ একত্রিত করা হচ্ছে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “তিনটি জাতীয় নির্বাচনই বিতর্কিত ছিল। এগুলোতে রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় ছাড়া কিছুই হয়নি। তদন্তে সব অনিয়ম বেরিয়ে আসবে।”
দুদক জানিয়েছে, অনুসন্ধানের মাধ্যমে যদি সাবেক সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের অপরাধ প্রমাণিত হয়, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতির এই তদন্তে যারা যুক্ত, তাদের ভূমিকা বিশদভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।