স্টাফ রিপোর্টার ।।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে অনিচুক ছিলেন এবং তাঁর লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া। তিনি বলেন, “৭ মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে”—এমন দাবি রাজনৈতিকভাবে বিভ্রান্তিকর ও ইতিহাস বিকৃতির অংশ।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার শিরোনাম ছিল: ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মুক্তিযোদ্ধারা আমৃত্যু আপসহীন’।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ২৫ মার্চ রাতে সামরিক অভিযান শুরুর আগে তাজউদ্দীন আহমদ শেখ মুজিবের কাছে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে যান। কিন্তু শেখ মুজিব তা প্রত্যাখ্যান করেন, কারণ তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে অভিযুক্ত হওয়ার আশঙ্কায় ছিলেন। তাঁর ভাষায়, “তিনি অখণ্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিলেন”।
১৯৭২ সালের সংবিধানকে মুক্তিযুদ্ধের ফসল হিসেবে উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, “যারা যুদ্ধ করেছেন, তারা ক্ষমতার প্রতি লোভ দেখাননি। ছাত্ররা ফিরে গেছে শিক্ষাঙ্গনে, সেনারা ক্যান্টনমেন্টে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে ভারতের অনুকূল্যে।” তিনি দাবি করেন, এই সংবিধানকে আওয়ামী লীগের সম্পত্তি হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, “জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর স্থান দেওয়ার দাবি অবান্তর। কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তি সংবিধান সংশোধন করতে পারে না।” তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান এবং বলেন, “নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই ঠিক করবেন দেশের সংবিধান কেমন হবে।”
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (PR) নিয়ে তিনি বলেন, “তিনটি দল ছাড়া কেউ এই পদ্ধতি চায় না। যাদের মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিল না, তাদের বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা করার অধিকার নেই। জনগণই ঠিক করবে তারা কী ধরনের নির্বাচন ও সংবিধান চায়।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ আলফাক। সঞ্চালনায় ছিলেন সহসভাপতি শহীদ বাবলু। বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এবং মো. হাবিবুর রহমান।