স্টাফ রিপোর্টার ।।
রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর সারাদেশে রেল চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে। ২৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই কর্মবিরতির ফলে দেশের বিভিন্ন রেলস্টেশনে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন জানান, ‘আজ সকাল থেকে রেলের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে।’ তবে কিছু ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে ছেড়েছে, কারণ ধর্মঘটের কারণে কর্মস্থল ছেড়ে যাওয়া অনেক কর্মীকে ফিরতে সময় লাগছে।
স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন জানান, আজ সকাল সাড়ে ৬টায় কমলাপুর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস ছেড়ে গেছে। সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত প্রায় ১০টি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে।
কেন হয়েছিল এই কর্মবিরতি?
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান আজ ভোররাত পৌনে ৩টার দিকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তিনি জানান, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান তাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।
রেলওয়ে শ্রমিকদের মূল দাবি ছিল:
- রানিং স্টাফদের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো চালু করা
- রানিং ভাতা পুনর্বহাল ও বৃদ্ধি করা
- মাস্টার রোলে থাকা শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ
- কর্মীদের প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা দ্রুত পরিশোধ করা
- নতুন লোকবল নিয়োগ দিয়ে কর্মীর ঘাটতি পূরণ করা
কর্মবিরতির প্রভাব: যাত্রী দুর্ভোগ
রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। টিকিট কেটে স্টেশনে এসে অনেকেই জানতে পারেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ।

কমলাপুর স্টেশনে পরিপারের সঙ্গে ট্রেনের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন এক তরুণী। ফাইল ফটো
ঠাকুরগাঁও: অনলাইনে টিকিট কাটা সত্ত্বেও ট্রেন বন্ধ থাকার কারণে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে টিকিট কাটা জয়া রায় বলেন, “স্টেশনে এসে জানতে পারলাম ট্রেন নেই, এখন কী করব বুঝতে পারছি না।”
গাজীপুর: ট্রেন না থাকায় বিকল্প ব্যবস্থা না পেয়ে অনেকেই বাড়তি ভাড়া দিয়ে বাস ও অটোরিকশায় যেতে বাধ্য হন।
খুলনা: ট্রেন বন্ধ থাকায় অনেকেই স্টেশনে অপেক্ষা করতে থাকেন, আবার অনেকে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া গুনে গন্তব্যে রওনা দেন।
রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সব ট্রেন নিয়মিত সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সব কর্মীকে কাজে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।