ঢাবি প্রতিনিধি ।।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে থাকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতি, যেটি ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ নামে পরিচিত, গতকাল রাতে মুছে ফেলা হয়। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় এবং বিক্ষোভ শুরু করে।
ঘটনা ও প্রতিবাদ
দিবাগত রাত আড়াইটায় শিক্ষার্থীরা টিএসসিসংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের অনুমতি নিয়ে এই কাজটি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার জন্য প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে।
কী ঘটেছিল
ঘটনার শুরু হয় রাত দুইটার দিকে, যখন ‘ঘৃণাস্তম্ভ’-এর গ্রাফিতি মুছে ফেলার কাজ শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন ইকবাল ও এক প্রতিবেদক ঘটনাটি লক্ষ্য করেন। গ্রাফিতি মুছে ফেলা বন্ধের অনুরোধ জানানোর পর ঘটনাটি শিক্ষার্থীদের একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়।
পোস্টটি ভাইরাল হলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কসহ অনেকে ঘটনাস্থলে আসেন। মেট্রোরেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কাজটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতিতে করা হয়েছে।
প্রক্টরের উপস্থিতি ও বক্তব্য
শিক্ষার্থীদের আহ্বানে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার পাঠানো ছবিতে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি দেখে মন্ত্রণালয় প্রশ্ন তোলে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে মুছে ফেলার নির্দেশ দেয়।
তবে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের এ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে স্লোগান দিতে থাকে। তারা প্রক্টর ও স্টেট অফিসারের পদত্যাগ দাবি করে।
ছাত্র নেতাদের প্রতিক্রিয়া
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আখতার হোসেন বলেন, ‘এটি একটি প্রতীকী ঘৃণাস্তম্ভ। এর ওপর কোনো আঘাত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চেতনাকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা।’
বিভিন্ন ছাত্র নেতারা দাবি করেন, আগের গ্রাফিতি পুনরায় আঁকা হবে এবং যারা এটি মুছে ফেলেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত।
প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি
প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ আজ জানিয়েছেন, ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ হিসেবে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পাবে এবং এটি সংরক্ষণ করা হবে। ভবিষ্যতে কেউ মুছে ফেলার চেষ্টা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।