স্টাফ রিপোর্টার ।।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৯টা ৩১ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৩১ মিনিটে) তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি।
তাঁর ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর সিঙ্গাপুর থেকে টেলিফোনে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মৃত্যুর সময় তিনি ও তাঁর বোন বাবার শয্যার পাশে ছিলেন। আজই বাবার মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর পিতা স্যার সৈয়দ নাসিম আলী ছিলেন ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলার প্রধান বিচারপতি।
তিনি কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ১৯৬২ সালে তিনি কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন।
১৯৭২ সালে মঞ্জুর ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কমিশনের ভিত্তিতে চামড়া বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন তিনি। এর আগে তিনি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোতে সাত বছর কাজ করেন এবং তার ৩০তম জন্মদিনে ব্যবসায়িক দুনিয়ায় পা রাখেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়। এর অংশ হিসেবে তিনি ১৯৭৬ সালে ১২ লাখ ২২ হাজার টাকায় হজরতবাগ, ঢাকার ওরিয়েন্ট ট্যানারি কিনে প্রতিষ্ঠা করেন অ্যাপেক্স ট্যানারি। ১৪ বছর পর যাত্রা শুরু করা অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার এখন দেশের শীর্ষ জুতা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।

সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী
তিনি অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (FBCCI) প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। ২০০৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। এছাড়া, তিনি পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ করেছেন।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী নিলুফার মঞ্জুরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, যিনি বাংলাদেশে সানবিমস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২০ সালে দুজনই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন। নিলুফার মঞ্জুর ২৬ মে ২০২০ সালে মৃত্যুবরণ করেন।